সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কসহ সিরাজগঞ্জের সকল রোডে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। আগের মতই চলছে গণপরিবহন, ট্রাক, লরি কাভার্ডভ্যানসহ পণ্যবাহী পরিবহন। তবে এখনও পুলিশ দায়িত্বে না ফেরায় সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে ছাত্র, স্কাউট সদস্য, বিএনসিসি, গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা।
এদিকে শহরের জনমানুষের মাঝে ফিরে এসেছে স্বস্তি। বিএনপির পক্ষ থেকে পাড়ায় মহল্লায় মিটিং করে জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামও মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে সার্বিক নিরাপত্তার আশ্বাস দিচ্ছে। সেই সাথে দলীয় নেতাকর্মীসহ সকলকে শান্ত থাকার আহবান জানাচ্ছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার (৯ আগষ্ট) সকাল থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়ক পর্যাপ্ত যানবাহন চলাচল করে। ঢাকামুখী লেনে পণ্য ও যাত্রীবাহী পরিবহন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করে। আঞ্চলিক সড়কগুলোতেও যান চলাচল স্বাভাবিক দেখা যায়। মহাসড়কের কড্ডার মোড়, হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন মোড়ে, সড়ক ও মহাসড়কে রোভার স্কাউটস, বিএনসিসি, গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেন।
জেলা শহরে বিপুল সংখ্যক থ্রি হুইলার চলাচল করতে দেখা যায়। দোকানপাট বিপনি বিতানও খোলা ছিল। শহরে জনসমাগম দেখা গেছে পর্যাপ্ত।
সিরাজগঞ্জ জেলা বাস, মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির সভাপতি সুলতান তালুকদার বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে স্বাভাবিকভাবে বাস চলাচল শুরু হয়। শুক্রবার সব রুটে যাত্রীবাহী বাসসহ সকল পরিবহন পুরোদমে চলছে। এর আগে বিএনপি নেতারা আমাদের সাথে বৈঠক করে আশ্বস্ত করেছে। তারপর থেকেই গাড়ী চালানোর সিদ্ধান্ত নেই।
সিরাজগঞ্জ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আঞ্জারুল ইসলাম ও মুন্তাসির বলেন, আমরা দেশটাকে নতুনভাবে গড়তে চাই। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা কদিন ধরেই শহর পরিস্কার ও ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে। কোথাও কোন চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বরদাস্ত করা হবে না।
সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম জানান, আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মন্দিরে মন্দিরে যাচ্ছি। হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে আশ্বস্ত করেছি। ব্যবসায়ীদের কাছে যাচ্ছি, মাইকিং করেছে সবাইকে শান্ত থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়াও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় ঘটে যাওয়া উশৃংখল ঘটনার সাথে জামাত ইসলামের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু জানান স্বৈরাচার পদত্যাগের দিন থেকে সিরাজগঞ্জে একশ্রেণীর মানুষ ভাঙচুর ও লুটপাট শুরু করে। আমি তখন থেকেই শহরের বিভিন্ন মসজিদের মাইকে বলেছি লুটপাট থেকে বিরত থাকার জন্য। পুলিশের সাথে কথা বলেছি এবং তাদের সহযোগিতা করার জন্য ওয়ার্ড ওয়ার্ডে কমিটি করে দিয়েছি। পরবর্তীতে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের সাথে কথা বলে সড়কে গাড়ী বের করতে বলেছি।
তিনি আরো বলেন আমরা মাইকিং করে বলেছি চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী কোন দলের নয়। যদি আমাদের দলের কেউ লুট করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যদি কোন লোকেরা এগুলো করে তার বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নেব। প্রতিদিন হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে মিটিং করছি। কারণ এই আন্দোলন করা হয়েছে পুরো দেশের বৈষম্য দূর করার জন্য। এখন এই দেশ সম্প্রীতির দেশ হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান সমভাবে বাস করবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন
✆ ০৯৬৩৮-৯০৭৬৩৬। ই মেইল: thedailydrishyapat@gmail.com
।
Copyright 2025 Pratidinerdrishyapat