উল্লাপাড়া ( সিরাজগঞ্জ )প্রতিনিধি:
উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের লাহিড়ী মোহনপুর বাজারে প্ল্যান্টের মূল ভবনের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে প্ল্যান্টের মূল ভবন নির্মাণ কাজ শেষের দিকে। বসানো হয়েছে যন্ত্রপাতি। উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্পের (ইউজিডিপি) আওতায় এই প্রসেসিং প্ল্যান্ট স্থাপনে অর্থ দিয়েছে জাইকা। আর এই প্ল্যান্টটি পরিচালনা করবে উল্লাপাড়া কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে উপজেলা মৌচাষি সমবায় সমিতি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানায়, সরিষা উৎপাদনে সারা বাংলাদেশে উপজেলা পর্যায়ে উল্লাপাড়ার স্থান প্রথম। প্রতি বছর এখানে ২৩-২৪ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়। গড়ে ২৮-৩০ হাজার মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদিত হয়। প্রতি বছর ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসের পুরো সময় সরিষাগাছে ফুল থাকে। এ সময় এখানে স্থানীয় ও বাইরে থেকে আসা মৌ খামারি মধু আহরণের জন্য ৯-১০ হাজার মৌ বাক্স সরিষার জমিতে ফেলেন।
এ উপজেলা গত বছরে সরিষা মৌসুমে মধু উৎপাদনের পরিমাণ ১৬৮ মেট্রিক টন। উৎপাদিত মধু খামারিরা দেশের বিভিন্ন বাজারে এবং ওষুধ কোম্পানিতে বিক্রি করে থাকেন। কিন্তু এ অঞ্চলে মধু প্রসেসিং প্ল্যান্ট না থাকায় প্রতি বছর মৌ খামারিদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। ফলে তাদেরকে বড় শহরে প্রসেসিং করাতে উৎপাদন ব্যয় বাড়ে এবং ঝামেলা পোহাতে হয়। আর এই কারণে দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলের মৌ খামারিরা উল্লাপাড়ায় একটি মধু প্রসেসিং প্ল্যান্ট নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. আসয়াদ বিন খলিল রাহাত জানান, মৌ খামারিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় উপজেলা কৃষি বিভাগ চলনবিল অধ্যুষিত লাহিড়ী মোহনপুর বাজারে মধু প্রসেসিং প্ল্যান্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। উত্তরাঞ্চলে এটাই হচ্ছে প্রথম মধু প্রসেসিং প্ল্যান্ট। ২০২২ সালে এই প্ল্যান্টের কাজ শুরু হয়। জাইকার অর্থায়নে ইতিমধ্যে প্ল্যান্টের মূল ভবন নির্মাণ প্রায় শেষ হয়েছে। প্রতিদিন এই প্ল্যান্টে প্রাথমিকভাবে ১মেট্রিক টন মধু প্রসেসিং করা সম্ভব হবে। মৌ খামারিদের কাছ থেকে খুব কম মূল্য নেওয়া হবে। এতে খামারিরা মধু উৎপাদনে যেমন আগ্রহী হবেন, পাশাপাশি তারা লাভবানও হবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমী জানান, জাইকার অর্থায়নে নির্মিত মধু প্রসেসিং প্ল্যান্টটি আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে চালু করা হবে। এটি চালু হলে এ অঞ্চলের মৌচাষিদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। সেই সঙ্গে তাদের মধু উৎপাদন ও ব্যবসায় গতি আসবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই নতুন প্ল্যান্ট বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করনে।