নিজস্ব প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে আবু হাসান নামের এক আ’লীগ নেতা অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে তার নিজের নামে এবং তার এক ছেলে ও এক মেয়ের নামে পৃথক পৃথকভাবে ৩টি টিসিবি’র ডিলারসীপ লাইসেন্স নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে তথ্য গোপন করে একই ব্যক্তি ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহার করে অভিনব প্রতারণামুলকভাবে টিসিবি’র তিনটি লাইসেন্স গ্রহন করে প্রকৃত গ্রাহকদের কাছে পণ্য বিক্রি না করে কালোবাজারে চড়া দামে বিক্রি করছেন। এতে অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহন করে টিসিবি’র পণ্য কালো বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন ওই আ’লীগ নেতা আর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মুল্যের টিসিবি পণ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কার্ডধারীরা। ফলে তদন্তপুর্বক লাইসেন্স বাতিল ও প্রতারণার মাধ্যমে একই ব্যক্তি তিনটি লাইসেন্স গ্রহন করার বিষয়টি খতিয়ে দেখে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জনস্বার্থে আব্দুল খালেক জেলা প্রশাসক, ডিজিএফআই এর অধিনায়ক, দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক, তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এনএসআই এর যুগ্ন পরিচালক ও ভোক্তা অধিকার এর সহকারী পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগে জানাযায়,তাড়াশ উপজেলার জাহাঙ্গীরগাঁতী গ্রামের মৃত আক্তার হোসেন এর ছেলে আবু হাসান আ’লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা হওয়ার সুবাদে বিগত আ’লীগের শাসনামলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিসিবি’র তিনটি লাইসেন্স নিজের কব্জায় নিয়েছেন। এরমধ্যে তিনি নিজে মাধাইনগর কালিবাড়ী বাজারে তার মেয়ের নাম মেসার্স রুখসানা ট্রেডার্স নামে একটি, তার ছেলে মাসুদ রানা’র নাম ব্যবহার করে জাহাঙ্গীরগাতী বাজারে মেসার্স আব্দুল্লাহ ট্রেডার্স নামে একটি ও কাঁন্তা-বেত্রাশীন বাজারে তার মেয়ে রুখসানা’র ডাক নাম রুপসা ব্যবহার করে মেসার্স রূপসা ট্রেডার্স নামে একটি লাইসেন্স গ্রহন করেন। এভাবে অভিনব কৌশলে তিনি তিনটি টিসিবি’র ডিলারশীপ গ্রহণ করে পণ্য সামগ্রী সুবিধাভোগি কার্ডধারীদের না দিয়ে কালো বাজারে বিক্রি করছেন। এভাবে তিনি বিগত আ’লীগের শাসনামলের মতোই দাপট দেখিয়ে ব্যাপকভাবে অনিয়ম ও দুর্নীতির করেই চলছেন।
তথ্যানুসন্ধানে আরো জানাযায়, উল্লেখিত তিন নামে তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখানো হলেও বাস্তবে ওইসব বাজারে তার কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই এবং কোনো প্রকার খাদ্যগুদামও নেই। তিনি নির্দিষ্ট সময়ে টিসিবি’র পণ্য উত্তোলন করে নিজ বাড়ীতে এনে সামান্য কয়েকজন গ্রাহককে কিছু পণ্য দিয়ে বাকি পণ্যগুলো বাড়িতে গুদামজাত করে পরে চড়াদামে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। এবিষয়ে সুবিধাবঞ্চিতরা কিছু বললে তিনি তাদের বলেন এসব বিষয়ে অভিযোগ করে কোনো লাভ নেই,সব মুখ বন্ধ করে দিয়েই এই ব্যবসা করছি। এছাড়াও তিনি ভয়ভীতি দেখিয়ে বলে বেড়ান আমার বিরুদ্ধে যদি কেউ কোনো অভিযোগ করতে যায়, তার নামে চাঁদাবাজীর মামলা করে জেল খাটাবো। স্থানীয়রা জানান, ইতোপূর্বেও টিসিবির পণ্য বেশ কয়েকবার চুরি করে কালো বাজারে বিক্রি করার পর
জনগণের হাতে ধরা পড়েছিলেন এই আ’লীগ নেতা ও টিসিবি ডিলার আবু হাসান। সেসময় আ’লীগ ক্ষমতায় থাকার সুবাদে ক্ষমা প্রার্থনা করে রক্ষা পান তিনি। কিন্তু পুর্বের ন্যায় আবারো কালোবাজারি করছেন তিনি। অভিযোগে আরো জানাযায়,এলাকায় বিভিন্ন লোকজনকে নতুন করে টিসিবি’র কার্ড করে দেয়ার কথা বলে তিনি বিভিন্ন মানুষের নিকট থেকে জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে নিয়েছেন কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তাদের কোনো কার্ড সরবরাহ করতে পারেননি তিনি। এতে ভুক্তভোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত ও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।
এদিকে বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে অবৈধ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলেও আ’লীগের প্রেতাত্মা এখনও তাড়াশের জাহাঙ্গীরগাঁতী এলাকার সাধারণ মানুষের ঘাড়ে ভর করে বসে অনিয়ম ও দুর্নীতি করেই চলেছেন। এদিকে বিগত আ’লীগের সময় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে তিনটি টিসিবি’র লাইসেন্স গ্রহণকারী আবু হাসানের বিরুদ্ধে তদন্ত পুর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিজিএফআই, দুর্নীতি দমন কমিশন, তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,এনএসআই ও ভোক্তা অধিকারের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।