নওগাঁ প্রতিনিধি:
প্রকৃতির সাথে যে বিরুপ আচরণ করা হয়েছে তার ফল এখন হাড়ে হাড়ে উপলদ্ধি করা হচ্ছে। বৈষ্যিক উষ্ণতা বাড়ছে। দিন দিন পরিবেশ বিপর্যয় ঘটে চলেছে। হিট স্ট্রোকে আকান্ত হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। নওগাঁয় জীব বৈচিত্র ও পরিবেশ রক্ষা, নদী-খাল-বিল দখল ও দুষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টায় শহরের মুক্তির মোড় শহীদ মিনারের সামনের সড়কে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), গ্রীণ ভয়েজ ও একুশের পরিষদ নওগাঁর উদ্যোগে বিভিন্ন দাবী নিয়ে এ কর্মসূচী পালিত হয়।
জীব বৈচিত্রের এক অসীম ভান্ডার ও অপার সম্ভবনাময় দেশ বাংলাদেশ। আমাদের বিরুপ আচারণের কারণে প্রকৃতি ধ্বংস করছি। ফলশ্রæতিতে আমরা নিজেরা বিপদে পড়েছি। যা আমাদের নিজেদের সৃষ্টি। নওগাঁর মান্দা উপজেলার ঐতিহ্য আন্দাসুরা বিলে প্রাকৃতিক ভাবে জন্ম নিয়েছে পদ্মফুল। পদ্মফুল শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, এটি ঔষধিগুন সম্পন্নও। পদ্মফুল পানি স্বচ্ছ রাখাসহ জীব বৈচিত্র রক্ষা করে। প্রতিনিয়ত দর্শনার্থীরা এ ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আসছেন। বিলটি পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে বিলটি সরকারি ভাবে লিজ দেয়া হচ্ছে। এতে ইজারাদার মাছ চাষের জন্য পদ্মফুল বিভিন্ন ভাবে ধ্বংসের চেষ্টা করছে। আলতাদীঘি শালবনে বিভিন্ন সময় আগুন লাগছে। কিভাবে আগুন লাগছে তা নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। বনে আগুন লাগা বা লাগানো মানব সৃষ্টি কিনা তা তদন্ত করা প্রয়োজন। আন্দাসুরা বিলের পদ্মফুল রক্ষার লিজ বাতিল এবং আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যানে আগুন লাগিয়ে উদ্ভিদ ধ্বংস, নদী-খাল-বিল দখল ও দুষণের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠেছে সামাজিক সংগঠনগুলো।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সদস্য ও একুশে পরিষদ নওগাঁ’র সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি.এম আব্দুল বারি’র সভাপতিত্বে একুশে পরিষদের সহ-সভাপতি প্রতাপ চন্দ্র সরকার, সাধারণ সম্পাদক এমএম রাসেল, সহ-সাধারন সম্পাদক নাইচ পারভীন, শাকিরুল ইসলাম রাসেল, সুবল চন্দ্র মন্ডল, নওগাঁ সরকারি কলেজ শাখা একুশে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শামিম, বাপা জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুকুল চন্দ্র কবিরাজ ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।
বাপার সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন- আন্দাসুরা বিলে প্রাকৃতিক ভাবে জন্ম নেওয়া পদ্মফুলকে বিভিন্ন ভাবে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই বিলের লিজ বাতিল করা প্রয়োজন। আলতাদীঘি শালবনে ৮বার আগুন লেগেছে। উন্নয়নের নামে প্রায় ৩ হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। কিভাবে আগুন লেগেছে বা লাগানো হয়েছে তার সঠিক কোনো তথ্য আমরা জানিনা। এগুলো তদন্ত করা প্রয়োজন।
নওগাঁ জেলা বাপার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুকুল চন্দ্র কবিরাজ বলেন- আজ প্রকৃতির বিরুপ প্রভাপ পড়েছে। যা আমাদেরই সৃষ্টি। যেসব প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে উটেছে তা সংরক্ষণ করা প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদী দুষণ ও দখলমুক্ত রক্ষা করা হোক। প্রকৃতিগুলোকে আমরা কাজে লাগাতে পারি। শুধু মানববন্ধন করলেই হবে না, তা বাস্তবায়ন করতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় যতদুর যাওয়ার দরকার হবে আমরা যেতে চাই।
একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি.এম আব্দুল বারি বলেন- একসময় ছোট যমুনা নদীতে পালতোলা নৌকা ও লঞ্চ চলতো। বিভিন্ন জেলা থেকে বণিকরা ব্যবসা করার জন্য আসতো। নদী দখল-দুষণ ও পলি পড়ে ভরাট হওয়ায় সেই নৌকা আর আসেনা। নদী দুষণের ফলে জীববৈচিত্র আজ হুমকির মুখে। নদী আমাদের মা। নদী বাঁচাতে হবে। নদী বাঁচলে জীববৈচিত্র রক্ষা সহ নদীর ওপর নির্ভরশীলদের জীবন জীবিকা ও কর্মসংস্থান বাড়বে। এছাড়া প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে উঠা বন ও পদ্মফুল রক্ষায় আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন
✆ ০৯৬৩৮-৯০৭৬৩৬। ই মেইল: thedailydrishyapat@gmail.com
।
Copyright 2025 Pratidinerdrishyapat