নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁর আত্রাইয়ে মানুষের চলাচলের জন্য জরাজীর্ণ ব্রিজ ভেঙে নির্মাণ করা হচ্ছিল নতুন ব্রিজ। আর নির্মাণাধীন ব্রিজের পাশ দিয়ে করা হয়েছিল বিকল্প রাস্তা হিসেবে কাঠের সাঁকো। কিন্তু নির্মাণাধীন ব্রিজের বিকল্প রাস্তাটি গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। যার কারণে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। ফলে ওই এলাকার আশপাশের কোমলমতি শিশু-কিশোরসহ সকল বয়সের হাজার হাজার মানুষ চলাচলের ক্ষেত্রে তাদের এখন নৌকায় একমাত্র নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। তবে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে পারাপারের জন্য নষ্ট নৌকা দিয়ে দায় সাড়ার কাজ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, এলজিডি ও ঠিকাদার থেকে জনসাধারণের পারাপরের জন্য যে নৌকা দেওয়া হয়েছে, সেটা নষ্ট এবং পারাপারের অযোগ্য। ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। যার কারণে মানুষ বাধ্য হয়ে ব্যক্তি মালিকানার নৌকায় করে পারাপার হচ্ছেন। এক্ষেত্রে গুণতে হচ্ছে টাকা। একটি ভ্যান পার হলে ২০টাকা, মোটরসাইকেলের জন্য ১০ এবং মানুষের জন্য জন প্রতি ৫ টাকা করে দিতে হচ্ছে। তারপরও বর্তমানে তাদের নৌকায় এখন একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার ভবানীপুর-শাহাগোলা পাকা সড়কের তারাটিয়া নামক স্থানে রতন ডারার (খাল) উপর দীর্ঘ দিন যাবৎ একটি ব্রিজ ছিল। ব্রিজটি জরাজীর্ণ হওয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) হতে নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের দরপত্র আহবান করা হয়। সে অনুযায়ী প্রায় তিন মাস পূর্বে ব্রিজটি ভেঙে ফেলা হয়। এদিকে ব্রিজ ভাঙার পর জনসাধারণের চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তা হিসেবে খালের (ডারার) উপর একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করা হয়। সাঁকোটি খুবই নিচু করে তৈরি করায় সম্প্রতি ডারার পানি বৃদ্ধি পেতে না পেতেই সাঁকোটি পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফলে ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। শাহাগোলা ইউনিয়নের তারাটিয়া, শ্রীরামপুর, কয়সা, তারাটিয়া বড়ডাঙ্গা, ছোটডাঙ্গাসহ বেশ কয়েক গ্রামের লোকজনকে শাহাগোলা হয়ে উপজেলা ও জেলা সদরের সাথে যোগাযোগের জন্য এ সড়কটি ব্যবহার করতে হয়। যার কারণে এটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা হওয়া সত্বেও বিকল্প রাস্তার সাঁকোটি অপরিকল্পিতভাবে নিচু করে তৈরি করায় এলাকার জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে শ্রীরামপুর গ্রামের নাইম ইসলাম ও কয়সা গ্রামের আব্দুল বারিকসহ অনেকেই বলেন, ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে বিকল্প রাস্তাটি অপরিকল্পিতভাবে তৈরি করার কারণে ডারার পানি বৃদ্ধি পেতে না পেতেই রাস্তাটি ডুবে গেছে। রাস্তাটি ডুবে যাওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সর্বসাধারণের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে শাহাগোলা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শেখ শাউন বলেন, জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ইমরান খান ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সাথে কথা বলে ওই স্থানে একটি নৌকার ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু নৌকাটি যে অচলাবস্থা হয়ে আছে তা আমার জানা ছিলো না। দ্রুত নৌকাটি সংস্কার করার কথাও তিনি বলেন।
আত্রাই উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ইমরান খান বলেন, বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিকল্প রাস্তাটি ডুবে গেছে। সেখানে নৌকা দিয়ে যাত্রী পারাপারের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের মাধ্যমে একটা নৌকা ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু নৌকাটা যে নষ্ট অবস্থায় পরে আছে তা আমার জানা ছিলো না। তিনি আরো বলেন, পানি কমে গেলে উঁচু করে রাস্তা এবং সাঁকো তৈরি করা হবে।