রিয়াজুল সাগর, রংপুর:
ভারতের এক তরফা পানি প্রত্যাহারে নাব্য সংকটে কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদী। পানি শূন্য দুই শতাধিক খাল ও বিল। এতে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে জীবন-জীবিকা ও জীব-বৈচিত্রে।
বছরের পর বছর ধরে এ অবস্থা চলতে থাকলেও এসব নদ-নদীতে পানি ধরে রাখার কোনো পদক্ষেপই নেয়নি সংশ্লিষ্ট দফতর।নাব্য সংকটে শুকিয়ে গেছে কুড়িগ্রামের অধিকাংশ নদ-নদী।শুকিয়ে গেছে নদীর তলদেশ। কোথাও কোথাও সামান্য পানি থাকলেও নেই প্রবাহ। নদীর বুক জুড়ে ধুধু বালু চর। চাষাবাদ হচ্ছে ফসলও।কুড়িগ্রামে জালের মতো বিস্তার করে আছে ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদী। এসব নদ-নদীর উৎসমুখ ভারতে পানি সরিয়ে নিচ্ছে। এ কারণে প্রতি বছর বর্ষার পরপরই পানি শূন্য হয়ে পড়ছে নদ-নদীগুলো। শুকিয়ে গেছে দুই শতাধিক খাল-বিলও।
এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা। কৃত্রিম সেচ দিয়ে করতে হচ্ছে চাষাবাদ। নদীতে মিলছে না মাছও। প্রকৃতি ও নদী নির্ভর জীবন বাঁচাতে যেকোনো উপায়ে সারা বছরই নদীতে পানি ধরে রাখার দাবি তাদের।কৃষকরা জানান, নদীতে কীভাবে মাছ হবে, পানি নেই। গোটা নদী মরুভূমি হয়ে আছে। ফলে আবাদই হচ্ছে না। এখন তারা মাছ শিকার করতে পারছেন না, খাবারও পাচ্ছেন না। তাদের চাওয়া সবসময় নদী পানি থাকুক। কিন্তু নদী হয়ে গেছে প্রায় মরুভূমি।এসব নদ-নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে উজানের ছেড়ে দেয়া পানিতে প্লাবিত হয়ে ক্ষতি হচ্ছে ঘর-বাড়ি ও ফসলের।
আবার শুকনো মৌসুমে পাওয়া যাচ্ছে না প্রয়োজনীয় পানি।ধরলা ও তিস্তা খননের মাধ্যমে নাব্য ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনার কথা জানালেও, নদ-নদীর ভাটির দিকে স্থাপনা নির্মাণ করে পানি ধরে রাখার কোনো প্রকল্প নেই বলে জানান সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান বলেন, ‘তিস্তা খননের মাধ্যমে কিছু নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি প্লাস পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা হবে। ভাটির দিকে কোনো স্ট্রাকচার নির্মাণ করে পানি ধরে রাখার মতো এখনো ওরকম কোনো প্রকল্পের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট-বড় ১৬টি নদ-নদীর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার প্রধান নদ-নদী। ৯ উপজেলায় রয়েছে দুই শতাধিক খাল ও বিল।