প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ৯:৪৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ ফেব্রুয়ারী ২১, ২০২৫, ৫:৪৭ পি.এম
ভাষা মতিনের গ্রামে কলাগাছের শহীদ মিনারে শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা

চৌহালী(সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
ভাষা আন্দোলনের অন্যতম আহ্বায়ক আব্দুল মতিনের জন্মভূমি সিরাজগঞ্জের চৌহালীর যমুনা চরাঞ্চলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এবছরও কলাগাছের তৈরী শহীদ মিনারে মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছে।
শুক্রবার সকালে ভাষা মতিনের গ্রাম শৈলজানা নিম্নমাধ্যমিক ও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে দিবসটি পালন করা হয়। এজন্য স্কুলের শিক্ষার্থীরা কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার ও স্কুলের ব্রেঞ্চ দিয়ে বেদী তৈরী করে। চারপাশ রংঙ্গিন কাগজ দিয়ে পতাকা টাঙিয়ে রাখে। একে একে শ্রদ্ধা জানায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক সহ গ্রামবাসি।এদিকে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে দেশজুড়ে যখন বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করা হয়েছে। ঠিক তখনই যমুনা বিধ্বস্ত চৌহালী উপজেলার উমারপুর ইউনিয়নের শৈলজানা চরে ভাষা মতিনের গ্রামে নেই কোন আয়োজন।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভাষা মতিনের কর্ম ও চিন্তা নিয়ে গবেষক হান্নান মোর্শেদ রতন। তিনি জানান, মাতৃভাষা বাংলার জন্য জীবনবাজি রাখা বীরপুরুষ তার গ্রামেই অবহেলিত। এর চেয়ে লজ্জা আর কিছুই নেই। বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকার উন্নয়ন না করলেও আশা করি বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্তরা বিশেষ নজর দিয়ে শহীদ মিনার নির্মান, পাঠাগার সহ নানা উন্নয়নে তার নামকরণ করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিনের স্মরণে জন্মভূমি এলাকার চাঁন্দইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্ত্বরে ২০১০ সালের দিকে বেসরকারি এনজিওর অর্থায়নে একটি শহীদ মিনার ও পাঠাগার নির্মাণ করা হয়। সেখানেই প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে নানা আয়োজনে শ্রদ্ধা জানাতো যমুনার চরাঞ্চলের কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ।
তবে ২০১৪ সালে যমুনার ভাঙনে বিলীন হয়ে যায় শহীদ মিনার ও বিদ্যালয় ভবন। পাঁচ বছর পর একই চরের শৈলজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্ত্বরে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়।পরবর্তীতে যমুনার ভাঙনে সেটিও বিলীন হয়ে যায়। এজন্য কয়েক বছর ধরে আবারও বাঁশ ও কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করে দিবসটি পালন করা হয়। উপজেলা প্রশাসন কিংবা কোন জনপ্রতিনিধি –রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কোন খোজ খবর নেয়া হয় না।একাজে এলাকার শিক্ষার্থীরা সহযোগিতা করেছে। সকালেই এলাকার বিভিন্ন বয়েসের মানুষ ও শিক্ষার্থীরা বাড়ি থেকে গাছের ফুল এনে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করেছে। দিনভর ছিল মানুষের ভিড়। আগামীতে কনক্রিটের শহীদ মিনারের ফুল দিতে চান শিক্ষার্থী জসিম, কবিরুল ও আলপনা সহ চরের সরলপ্রাণ মানুষ।
এবিষয়ে শৈলজানা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা জানান, অবহেলিত চর এলাকায় অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এজন্য এলাকার শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে বাড়ির উঠানে শহীদ মিনার তৈরি করে শহীদ দিবস পালন করছে। সারাদেশে দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার থাকলেও ভাষা মতিনের এলাকায় বরাবরই অবহেলিতই রয়েগেল।
এবিষয়ে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জুয়েল মিয়া জানান, ভাষা মতিনের এলাকায় শহীদ মিনার নির্মানে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তার স্মরণে উপজেলা সম্মেলন কক্ষকে নামকরণের চিন্তা করেছি। নিয়ম মেনে আশা করছি দ্রুত আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষনা করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন
✆ ০৯৬৩৮-৯০৭৬৩৬। ই মেইল: thedailydrishyapat@gmail.com
।
Copyright 2025 Pratidinerdrishyapat