নিজস্ব প্রতিবেদক: সিরাজগঞ্জের রামগাঁতী মহল্লায় রাতের অন্ধকারে নিঃসন্তান অসহায় এক দম্পত্তির জমিতে জোরপূর্বক ঘর তুলে টিনে বেড়া দিয়ে দিলো প্রতিপক্ষের লোকজন।শনিবার (১৩ জুলাই) ভোররাত তিনটার দিকে রামগাঁতী মহল্লার আব্দুর রাজ্জাক ওরফে সাহেবের জমিতে ঘর তোলা হয় এবং বিবাদমান জমি ঘিরে বেড়া দেওয়া হয়। প্রতিপক্ষ একই মহল্লার মৃত কাজেম উদ্দিনের ছেলে মো. আবু সিদ্দিক, রফিকুল ইসলাম তারা, নুর ইসলাম, জাগিনুর ইসলাম, শরিফুল ইসলাম ওরফে শুক্কুরের নেতৃত্বে জোরপূর্বক এই ঘর তোলা হয়।সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে আবু সিদ্দিক গং দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘবদ্ধভাবে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে সাহেব আলীর ভোগদখলে থাকা জমিতে টিনের একটি ছাপড়া তোলে এবং একটি টিনের বেড়া দেওয়া হয়। এ সময় আব্দুর রাজ্জাক ওরফে সাহেব আলী ও তার স্ত্রী ঘরের মধ্যে থাকলেও তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। দেশীয় অস্ত্রের ভয়ে তারা বাইরে বের হতে পারেনি।ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক ওরফে সাহেব আলী জানান, বনবাড়িয়া মৌজার সিএস ৩১৩ খতিয়ানের ২৪৫দাগের ৬৮ শতাংশ জমি আমার দাদা দারোগ আলী নামে রেকর্ড হয়। দারোগ আলীর মৃত্যুর পর উল্লেখিত জমি আমার বাবা মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনসহ তার চার ভাই এজমালিতে ভোগদখল করেত তাকে। এ অবস্থায় ১৯৭৪ সালে আপোষ ছাহামের ভিত্তিতে অরেজিষ্ট্রিকৃত বন্টননামা দলিলমূলে ৪ ভাই বাটোয়ার করে নেয়।ওই বন্টননামা দলিল অনুসারে ৬৮ শতকের কাতে ২৩ শতক ভূমি আমার বাবা মোয়াজ্জেম হোসেন প্রাপ্ত হন। তিনি ভোগদখল করাবস্থায় ১৯৯৭ সালে আমার বরাবর ১৭ শতাংশ এবং আমার বোনের ছেলে লাল মিঞা বরাবর আরও ৪ শতাংশ জমি দানপত্র দলিলমূলে রেজিস্ট্রি করে দেন। বাকী ২ শতাংশ জমি আমার বাবা মোয়াজ্জেম হোসেন তার ভাই কাজেম উদ্দিনের কাছে বিক্রি করেন।তিনি আরও বলেন, আমার নামে দলিল করে দেওয়া ১৭ শতাংশ জমি ভোগদখল করাবস্থায় আর এস খতিয়ানে ভুলবশত ৪ শতাংশ আমার চাচা কাজেম উদ্দিনের নামে রেকর্ড হয়। বিষয়টি জানতে পেরে আমি নিজে বাদী হয়ে গত ২০২৩ সালের ১ মার্চ মোকাম সদর সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে রেকর্ড সংশোধেন মামলা দায়ের করি। মামলাটি আদালতে চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে শুনানী শেষ হয়ে রায়ের অপেক্ষায় আছে।এ অবস্থায় মামলা দায়ের করার কারণে আমার চাচা কাজেম উদ্দিনের ছেলেরা বিভিন্ন সময় আমাকে মারপিটের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিল। এরই এক পর্যায়ে গত ৭ জুলাই আমার চাচাতো ভাই ছেলে মো. আবু সিদ্দিকের নেতৃত্বে ১০/১৫ জন বাঁশের লাঠি, কাঠের বাটাম ও লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাস্তার উপর দাঁড়ায়। এ সময় আমাকে একা পেয়ে মারপিট ও হত্যার হুমকি দেয় তারা। আমার কোন ছেলেপেলে নেই। পরিবারে আমার স্ত্রী ছাড়া কেই নেই। এ অবস্থায় আমি ভয় পেয়ে চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। তখন হামলাকারীরা হুমকি দিতে দিতে চলে যায়। এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) মোকাম নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ‘ক’ অঞ্চলে ৭ ধারা মামলা দায়ের করেছি। এদিকে ওই ৭ ধারার মামলার নোটিশ পাওয়ার পর ক্ষিপ্ত হয়ে সিদ্দিক গং শুক্রবার দিবাগত রাতে জোরপূর্বক বিবাদমান জমিতে ঘর তোলে এবং বেড়া দেয়।এ বিষয়ে সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হোসেন আলী বলেন, জমিটা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। তারপরও বিবাদমান ওই জমিতে রাতের অন্ধকারে ঘর তোলা হয়েছে। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক ওরফে সাহেবের সাথে কথা বলেছি। তবে অপরপক্ষের কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আমরা আদালেত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন
✆ ০৯৬৩৮-৯০৭৬৩৬। ই মেইল: thedailydrishyapat@gmail.com
।
Copyright 2025 Pratidinerdrishyapat