বগুড়া ব্যুরো ও নওগাঁ প্রতিনিধি:
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারাদেশ উত্তাল। আন্দোলনে চলছে হামলা, পাল্টা হামলা। সারাদেশের মতো এবার বগুড়ার সান্তাহারে শুরু হয়েছে কোটা সংস্কারের আন্দোলন। “চাইতে গেলাম অধিকার; হয়ে গেলাম রাজাকার, আমরা নই রাজাকার, চাই আমরা অধিকার" এই স্লোগানকে সামনে রেখে বুধবার ১৭ জুলাই সকাল থেকে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে এদিন দুপুরে চিলাহাটি থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী রুপসা এক্সপ্রেস ট্রেন থেমে যায়। এ ঘটনায় উত্তরবঙ্গের সাথে প্রায় ২ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পরে শত শত ট্রেন যাত্রী। পরে রেলগেট এসে দীর্ঘ সময় রেললাইন অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শিক্ষার্থীরা চলে গেলে প্রায় তিন ঘন্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এখনও পর্যন্ত সতর্ক অবস্থানে আছে পুলিশ।
এর আগে এদিন সকালে উপজেলার সান্তাহার বিপি স্কুল থেকে শুরু করে পৌর শহরের সরকারি কলেজ হয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র এসে ঘন্টাব্যাপী বিভিন্ন দাবি তুলে শ্লোগান দেয় বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা সকলে মেধার মূল্যায়ন চাই। এই মেধার মূল্যয়ন চাইতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের ভাইবোনদের উপর অন্যায়ভাবে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের ছেলেররা। তাদের হামলার কারণে আহত হয়ে অনেক ভাই মৃত্যু বরণ করেছে। আমরা আর কোনো ভাই বোনদের হারাতে চাই না। সেই কারণে সারাদেশে চলমান নায্য দাবি নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মতো আমরাও রাস্তায় নেমেছি। প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের এই আনদোলন অব্যাহত থাকবে যতোদিন মেধার মৃল্যায়ন করা না হবে ততোদিন পর্যন্ত। সেই সাথে সরকারের কাছে অনুরোধ দ্রুত কোটা সংস্কার করা হোক।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের খবর পেয়ে ছুটে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমানা আফরোজ ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান পিন্টু।
চেয়ারম্যান পিন্টু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এরমধ্যে প্রচন্ড রোদে আন্দোলনে প্রায় ৫০ শতাধিক শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে যান। তাদের খাবার পানি ও স্যালাইন খাইয়ে সুস্থ করেন তিনি ৷ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমরা যেভাবে আন্দোলন করছো এটা সঠিক উপায় নয়। হাইকোর্টে একটা সিদ্ধান্ত অপেক্ষাধীন অবস্থায় রয়েছে- যা আগামী এক মাসের মধ্যে এই কোটা সংষ্কার বিষয়ে একটা সমাধান আসবে। এরপর আস্তে আস্তে শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে চলে যান।
তবে আদমদীঘি ও সান্তাহার ফাঁড়ি পুলিশ এবং রেলওয়ে থানা পুলিশ ব্যাপক সতর্ক অবস্থানে ছিল। তাদের ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। বারবার বুঝনোর চেষ্টা করছিলেন আদমদীঘি থানার ওসি রাজেশ কুমার চক্রবর্ত্তী।
একইভাবে বুঝনোর চেষ্টা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে জানিয়ে রেলওয়ে থানার ওসি মোক্তার হোসেন বলেন, আমরা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সর্তক অবস্থানে ছিলাম। শিক্ষার্থীদের বুঝানোর চেষ্টা করেছি। তারা বুঝতে পেরেছে। বর্তমানে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন
✆ ০৯৬৩৮-৯০৭৬৩৬। ই মেইল: thedailydrishyapat@gmail.com
।
Copyright 2025 Pratidinerdrishyapat