নিজস্ব প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় কোল্ড স্টোরেজে আলুর বস্তা সংরক্ষণে ভাড়া বাড়ানোর কারণে বিপাকে পড়েছেন আলু ব্যবসায়ী ও চাষীরা । চলতি বছরে এমনিতেই আলুর দাম কম। তার সাথে যুক্ত হয়েছে অতিরিক্ত পরিবহন ব্যয় । সেই সাথে সংরক্ষণের ভাড়া বাড়ানোর কারণে মাথায় হাত উঠেছে আলু ব্যবসায়ী ও কৃষদের। তবে উল্লাপাড়ার হাটিকুমরুলে নয়ন কোল্ড স্টোরেজে প্রথম আলু রাখছেন এখানকার চাষী ও ব্যবসায়ীরা। যদিও এই কোল্ড স্টোরেজের ভাড়া বাড়ানো হয়নি।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বস্তা প্রতি আলু কোল্ড স্টোরেজে রাখতে খরচ হচ্ছে প্রতি কেজি ৮ টাকা। এর সাথে যুক্ত হয়েছে পরিবহন ব্যয় কেজি প্রতি ১০ টাকা। এতেই আলু কেজি প্রতি লোকসান গুনতে হচ্ছে ২ টাকা।
তাতে ৬ মাস পর কোল্ড স্টোরেজ থেকে আলু বের হয়ে মূল্য দাড়ায় কেজি প্রতি প্রায় ৪০ টাকা।
এমন পর্যায়ে এসে ব্যবসায়ী ও চাষীরা লাভের অনিশ্চয়তায় নিয়ে কোল্ড স্টোরেজে আলু সংরক্ষণ করছেন ।
বর্তমানে আলুর দাম অনেক কম। ৬ মাস পর এই আলু কেজি প্রতি ৪০ টাকার বেশি না হলে অনেক লোকসান গুনতে হবে ব্যবসায়ীদের ।
উল্লাপাড়ার খালিয়াপাড়া গ্রামের আলু ব্যবসায়ী মিরাজুল ইসলাম, রামকান্তপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মাহমুদুল আলম ও এনামুল হক জানান, এবছর আলুর বাজারের দর খুবই কম। তার উপর কোল্ড স্টোরেজে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বাড়তি৷ যার কারণে আমরা অনেক সমস্যায় পড়েছি। স্থানীয়ভাবে পরিবহন ব্যয়ও বেড়েছে।
তারা আরও জানান, উল্লাপাড়ায় রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থিত পুরোন কোল্ড স্টোরেজটির মালিকের মৃত্যুতে কয়েক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে উল্লাপাড়া সিরাজগঞ্জের অধিকাংশ কৃষকদের বগুড়ার বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজে আলু রাখতে হচ্ছে।
উল্লাপাড়া থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে এসব কোল্ড স্টোরেজ হওয়ার কারণে আলু পরিবহন ব্যয় অনেক বেড়েছে। তার উপর ভাড়া বাড়ানোর কারণে এবার তাদের লোকসান গুণতে হবে । এসব ব্যবসায়ী আরও জানান, উল্লাপাড়ায় নব নির্মিত নয়ন কোল্ড স্টোরেজের ধারণ ক্ষমতা ৬০ হাজার বস্তা। এতে এই জনপদের উৎপাদিত আলু এখানে পুরোটা সংরক্ষণ সম্ভব নয়। তাই তাদেরকে বগুড়াতেই যেতে হয়।
হাটিকুমরুলে এলাকায় অবস্থিত নয়ন কোল্ড স্টোরেজের মালিক শুভ’র সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে জানায় , ৬০ কেজি আলুর বস্তা তারা পুরো মৌসুমে সংরক্ষণ করেন। এরই পরিবর্তে তিনি ব্যবসায়ী ও চাষীদের কাছে থেকে ভাড়া বাদ নিয়ে থাকেন ৩৫০ টাকা। তিনি আরও জানান, যেহেতু এবারই প্রথম আলু সংরক্ষণ শুরু করেছি তাই অন্য এলাকার তুলনায় ভাড়া একটু কম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি । তবে আনন্দের বিষয় হল আলু চাষী ও ব্যবসায়ীরা প্রথমবার এখানে আলু সংরক্ষণে খুব বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে বলে জানানও তিনি।
বগুড়ার খন্দাকার কোল্ড স্টোরেজের স্বত্তাধিকারী মাহবুবুর রহমান জানান, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে এ বছর তারা ৬৫ কেজির প্রতি বস্তায় ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা বাড়ানোর বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন। তবে এখন পর্যন্ত ভাড়া বৃদ্ধির পরিমান চূড়ান্ত হয়নি। এ যাবত প্রতি বস্তায় ভাড়া নিয়েছেন ৩৫০ টাকা করে বলে উল্লেখ করেন মাহবুবুর রহমান।