নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁর বদলগাছীতে উপকারভেগীদের মধ্যে ভিজিএফের চাল কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভিজিএফের চাল বিতরণ
করা হয়। অভিযোগ সেসময় উপকারভোগীদের এক থেকে দেড় কেজি করে চাল কম দিয়ে বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে চাল বিতরণকালে পরিষদে উপস্থিত ছিলেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাসুদ রানা ও ট্যাগ অফিসার সন্ধা রানী। আর তাদের উপস্থিতিতে চাল বিতরণে এমন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি চালের ওজন মাপার জন্য ডিজিটাল স্কেল মেশিন ব্যবহার করা হয়নি। একটি বালতিতে করে মনগড়াভাবে চাল বিতরণ করা হয়।
একাধিক উপকারভোগী জানান, প্রত্যেক দরিদ্র উপকারভোগীকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও না মেপেই হাত আন্দাজে একটি বালতিতে করে দেওয়া হয়েছে।
পরে মেপে দেখা যায়, প্রায় প্রত্যেককেই চাল কম দেওয়া হয়েছে। কেউ পেয়েছে ৮ কেজি ২ শ গ্রাম, কেউ সাড়ে ৮ কেজি আবার কেউ ৯ কেজি করে। চাল পাওয়া ওই ইউনিয়নের কয়েকজন উপকারভোগী বলেন, আমাদের ১০ কেজির জায়গায় ৮ কেজি ২০০ গ্রাম চাল দিয়েছে। যেখানে এক কেজি ৮০০ গ্রাম চাল নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বয়স্ক চাচা বলেন,আমি প্রতিবাদ করেছি চাল কম দেওয়ার জন্য। কারো কোন কথা শুনছে না চেয়ারম্যান। নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন,নাম আমি বলবো না।আমার সাথে চেয়ারম্যানের কাছে চলেন।
সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার সন্ধা রানী জানান, আমি চাল বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলাম। আপনি উপস্থিত থেকে চাল কম দেওয়ার কারন কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যতক্ষণ ছিলাম সঠিকভাবে দেওয়া হয়েছে। কতক্ষণ ছিলেন ঐ পরিষদে। জবাবে বলেন আমি এখন অফিসে।
এদিন দুপুর সন্ধ্যা পর্যন্ত মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: মাসুদ রানা র মুঠোফোনে বারবার ফোন দিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও +8801711932293 সংযোগ টি বন্ধ পাওয়া গেছে।
একই চিত্র মিঠাপুর ইউনিয়নে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়। সেখানেও প্রত্যেক উপকারভোগীকে এক থেকে দেড় কেজি করে চাল কম দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিলাসবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদেও আছে চাল কম দেওয়ার অভিযোগ। তবে বিষয়টি স্বীকার করে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান কেটু মুঠোফোনে বলেন, চাল মোটামুটি মাফ মতোই দেওয়া হয়েছে। তবে সামান্য কিছু চাল বাঁচছিল, সেগুলো কয়েকজনকে দেওয়া হয়েছে। ৮-১০ মিসকিক অসহায় এসেছিল চাল নিতে এসে পায়নি তাদেরকে। একই ব্যক্তি একাধিকবার চাল নিয়েছে বিষয়টি সম্পর্কে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা চালের স্লিপ কিনে নেয়, তারা অন্যকে দিয়ে এই কাজটি করাই। তবে আমি এককভাবে দিতে পারলে কোনো সমস্যা ছিল না। স্থানীয় লোকজন বা রাজনৈতিক কিছু কারণে সঠিকভাবে বিতরণ সম্ভব হয় না। আমি পরবর্তীতে বিষয়টি দেখবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অ: দা:) মো: কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, আমি আপনার মাধ্যমেই জানতে পারলাম চাল কম দেওয়ার কথা। খোঁজ খবর নিবো। এবং প্রয়োজনে তদন্ত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।