স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ:
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ভোট না দেওয়ার অভিযোগে হামলা চালিয়ে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থক আলহাজ্ব শাহজাহান আলী নামে এক শিক্ষক ও চান মোহাম্মদ নামে এক মাছ ব্যবসায়ীকে বেদম মারপিট করা হয়েছে। এ ছাড়াও তামাই বাজারের আরও কয়েক ব্যবসায়ীর দোকানপাট তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজীয় প্রার্থী আমিনুল ইসলামের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। অপরদিক কম ভোট পাওয়ার কারণে উপজেলার রয়নাপাড়া গ্রামকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
বুধবার রাতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটের ফলাফল ঘোষনার পর থেকে শুরু হওয়া সহিংসতা শুক্রবার অবধিও চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে বেলকুচি উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের মহির উদ্দিনের ছেলে শাহ আলম দোয়াত কলম প্রতিকে বিজয়ী চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম সরকারের সমর্থকদের সাথে নিয়ে এসে হামলা চালায় রয়নাপাড়া গ্রামে। সামনে পেয়ে বেধরক মারপিট করে স্থানীয় শিক্ষক আলহাজ্ব শাহজাহান আলীকে। তার চিৎকারে গ্রামবাসিরা ছুটে আসলে পালিয়ে যায় হামলাকারিরা। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় শাহজাহান আলীকে উদ্ধার করে বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে অভিযোগ দেওয়া হয় বেলকুচি থানায়।
বৃহস্পতিবার সকালে দোয়াত কলম প্রতিকের বিজয়ী প্রার্থী আমিনুল ইসলামের সমর্থক মোকলেস ও আল-আমিনের নেতৃত্বে ১০/১২ জন তামাই বাজারের মাছ ব্যবাসয়ী মো. সিদ্দিক, মোহাম্মদ আলী ও চান মোহাম্মদের মাছ লাথি দিয়ে ফেলে দেয়। এ সময় চান মোহাম্মদকে বেদম মারপিট করা হয়।
ওই বাজারের হাফিজুল ইসলামের কাঁচামালের দোকান আব্দুল মান্নানের মুদি দোকান ও আসাদুলের রঙের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
ভুক্তভোগীরা জানান, রয়না পাড়া ও কালিয়াপাড়া গ্রাম নিয়ে তামাই বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র। এ কেন্দ্রে মোটর সাইকেল প্রতিকে বদিউজ্জামান ফকির ১ হাজার ১৭১ ভোট পান ও আমিনুল ইসলাম দোয়াত কলম প্রতিকে পান ৪৬৮ ভোট। দোয়াত কলম সমর্থকরা বলছেন রয়নাপাড়া গ্রামের লোকজন তাদের ভোট দেয়নি। এ কারণে দোয়াত কলম প্রতিকের প্রার্থীর নিকট আত্মীয় ফজল তালুকদারের নেতৃত্বে রয়নাপাড়ার লোকজনকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। গ্রামের কেউ বাইরে বের হওয়ার সাহস পাচ্ছে না।
ওই গ্রামের ইউপি সদস্য বাবলু প্রামানিকও অবরুদ্ধ হয়ে আছেন বলে জানান। দোয়াত কলম সমর্থক এরশাদ ও বাবুর নেতৃত্বে মোটর সাইকেল বহর তাকে ধরার জন্য রয়নাপাড়া এসে ঘুরছে। তারা বলছে তোরা তামাই গ্রামের মুরুব্বীদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেসনি। তোদের তামাই বাজারে আসতে দেব না।
এদিকে ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সৌভিক ইসলাম শোসন জানায়, বুধবার দোয়াত কলম বিজয়ী হওয়ার পর বিজয় মিছিল নিয়ে আমার বাড়িঘরে ঢিল ছোড়া হয়।
এসব বিষয়ে বেলকুচি থানা ওসি মো. আনিসুর রহমান জানান, তামাই বাজারের বিষয়ে মৌখিকভাবে জানতে পেরেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে কিছু জানা যায়নি। ছাত্রলীগের সভাপতির বাড়িঘর ভাংচুরের বিষয়েও কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। এসব বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।
সিরাজগঞ্জ সহকারি পুলিশ সুপার (বেলকুচি সার্কেল) মি. জন রানা বলেন, ঘটনাগুলো আমাদের কেউ জানায়নি। বিষয়টি জানলাম। প্রয়োজনীয় পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেবেন।