নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রায় তিন বছর আগে ৫৭ শতাংশ জমি বিক্রির ঘোষণা দেন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বড় পাঙ্গাসী ইউনিয়নের খাদুলী গ্রামের আব্দুল জব্বার ও তার দুই ভাই এছহাক আলী ও ছোলেমান আলী। ওই জমি কিনতে রাজি হন একই গ্রামের দশের আলী সরকার। ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আলোচনা সাপেক্ষে ১৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা জমির মূল্য নির্ধারণ হয় এবং স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে ১৮ লাখ টাকা নগদ দিয়ে একশো টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বায়নানামা করেন দশের আলী ও আব্দুল জব্বার গং।
পরবর্তীতে জমির খারিজ নিয়ে জটিলতা থাকায় রেজিষ্ট্রি করে দিতে কালক্ষেপন করেন জব্বার আলী গং। এ অবস্থায় চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি জমির বাকী ২৪ হাজার টাকা নিয়ে জব্বার আলীকে দিলে তিনি অতিস্বত্বর জমি রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। কিন্তু আরও ৬ মাস কেটে গেলেও জমি রেজিষ্ট্রি করে দেন না তারা। এরপর ক্রেতা দশের আলী লোকজন নিয়ে গত ৭ জুন সকালে আব্দুল জব্বারের বাড়িতে যান এবং জমি রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার অনুরোধ করেন। ওই সময় আব্দুল জব্বার জমি রেজিষ্ট্রি করে দিতে অস্বীকার করেন। তখন ক্রেতা দশের আলী জমি বাবদ নেওয়া ১৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা ফেরত চাইলে সেই টাকা দিতেও অস্বীকার করেন তিনি। এক পর্যায়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে দশের আলীকে বাড়ি থেকে বেরে করে দেন।
এদিকে চতুর আব্দুল জব্বার জমির ক্রেতা দশের আলীকে ফাঁসাতে তার ও তার ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অসহায় হতদরিদ্র বৃদ্ধ দশের আলী বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। বাধ্য হয়ে তিনি মঙ্গলবার (১১ জুন) মোকাম উল্লাপাড়া থানা আমলী আদালতে তিনজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
দশের আলী বলেন, আমি একজন হতদরিদ্র কৃষক। জীবনের সকল অর্জিত টাকা দিয়ে ওই ৫৭ শতক জমি কিনেছিলাম। নগদ ১৮ লাখ টাকা দিয়ে বায়নানামা করেছি। সেখানে এলাকার গণমান্য ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন। অথচ এখন জমি রেজিষ্ট্রিও করে দিচ্ছে না, আবার টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। উল্টো আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল জব্বার বলেন, জমিটা কট দিয়েছিলাম ২ লাখ টাকায়। তারা ১৮ লাখ ২৪ হাজার টাকার গদ লিখে থানায় অভিযোগ দেয়। এ বিষয়ে আমি কোর্টে মামলা দায়ের করেছি।
তবে আব্দুল জব্বারের মেজ ভাই এছহাক আলী জমির পুরো টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, জমি কেন রেজিষ্ট্রি করে দিচ্ছে না সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমাকে জানানোও হয় না। আমি মিথ্যা কথা বলবো না, দশের আলী জমির পুরো টাকাই দিয়েছেন। জমি বিক্রির সময় আমি ছিলাম। এরপর কি হয়েছে আমি জানিনা। তবে দশের আলীকে জমি রেজিষ্ট্রি করে দেয় নাই। কিন্তু জমিটা তারই দখলে আছে। দশের আলীই চাষাবাদ করে খাচ্ছেন।