নিজস্ব প্রতিবেদক :
যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। সিরাজগঞ্জ শহরের যমুনা নদীর হার্ডপয়েন্টে গত ১৮ ঘণ্টায় ৩২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে যমুনায় পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের নিম্নভূমি তলিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে যমুনার তীরবর্তী অঞ্চলে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। চলতি মৌসুমে খুব বড় না হলেও মাঝারী আকারের বন্যা হওয়ার আশংকা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ০২ মিটার। সকাল ৬টা থেকে ১২টা পর্যন্ত মাত্র ৬ ঘণ্টায় ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৯০ মিটার)। এই পয়েন্টে গত ৩০ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৫৮ সেন্টিমিটার।
অন্যদিকে কাজিপুর মেঘাই পয়েন্টে দুপুর ১২টায় পানি সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৭৪ মিটার। ৬ ঘণ্টায় এ পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে (বিপৎসীমা ১৪ দশমিক ৮০ মিটার)। সর্বশেষ ৩০ ঘণ্টায় এ পয়েন্টে পানি বেড়েছে ৬৪ সেন্টিমিটার।
সিরাজগঞ্জ পাউবো সূত্র জানায়, ৩ জুন থেকে অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়ে যমুনায়। এক সপ্তাহ পরই কমতে থাকে। এরপর ১৮ জুন থেকে আবারও দ্রুত বাড়তে থাকে যমুনার পানি। টানা পাঁচ দিন বাড়তে থাকার পর ২২ জুন থেকে কমতে শুরু করে। ২৭ জুন স্থিতিশীল থাকার পর ২৮ জুন আবারও পানি বেড়েছে। ২৯ জুন আবার স্থিতিশীল হয়ে ৩০ জন সামান্য কিছুটা কমে যমুনার পানি। ১ জুলাই থেকে আবারও পানি বাড়তে থাকে।
এদিকে যমুনার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে জেলার কাজিপুর উপজেলার খাসরাজবাড়ী, সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ও শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর এবং কৈজুরীতে তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এসব অঞ্চলের দেড় শতাধিক বাড়িঘর ও স্থাপনা নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান জানান, যমুনার পানি দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ইতিমধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। আরও তিন থেকে চারদিন পানি বাড়বে। বড় ধরণের বন্যা না হলেও মাঝারী বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি বলেন। তিনি আরও বলেন, জেলার ভাঙন কবলিত এলাকাগুলো জিওটিউব ও জিওব্যাগ ডাম্পিং করে ভাঙন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।