বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা রোগীদের ব্যবস্থাপত্র ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হওয়ার আগেই চিলের মত ছোঁও মেরে কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকা দালাল চক্রের বিরুদ্ধে । স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসকদের প্রত্যক্ষ- পরোক্ষ মদদে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনেরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকদের রুমে রুমে গিয়ে সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ডাক্তারের চেম্বারের সামনে রোগীদের দীর্ঘ লাইন রয়েছে। একজন দালাল রোগীদের লাইন ঠিক করে দিচ্ছে আর একজন ডাক্তারের চেম্বারে ভিতরে। ডাক্তার এক এক করে রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্রে রোগ নিরুপনের জন্য পরীক্ষা নিরিক্ষা লিখে দিচ্ছেন। সাথে সাথে রুমের ভিতরে থাকা দালাল চক্রের সদস্য রোগীর হাত থেকে ব্যবস্থাপত্র ছোঁও মেরে কেড়ে নিচ্ছেন। রোগী বাধ্য হয়েই তখন ওই দালালের পিছু ছুটছেন তার মনোনিত বেসরকারি প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগত বেশ কয়োকজন রোগী ও স্বজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন দালালের আস্তানা হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রত্যেক ডাক্তারের রুমে ও রুমের সামনে দালাল নিযুক্ত করা থাকে। ডাক্তার প্রেসক্রিপশনে টেস্ট লিখে দেওয়ার সাথে সাথে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিযুক্ত দালাল আমাদের হাতে থেকে ছোঁও মেরে কেড়ে নিয়ে বলে চলেন টেস্ট করতে হবে। তখন যদি বলি আমি আপনার কথা মত যাবো কেন। আমার যেখানে ইচ্ছে সেখানেই টেস্ট করে ডাক্তারকে দেখাবো। তখন দালাল বলে আমাদের ওখান থেকে যদি টেস্ট না করান তাহলে ওই রিপোর্ট স্যার দেখবে না। এই কথা শুনে আমরা জিম্মি হয়ে দালালের পিছনে ছুটে গিয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষা করিয়ে নিয়ে। এটা শুধু আমাদের ক্ষেত্রে তা নয় এই হসপিটালে যারাই চিকিৎসা নিতে আসে তাদেরই দালালের ক্ষখপ্পরে পরতে হয়। এই দালালদের ক্ষপ্পরে পরে ২শ টাকার টেস্ট করতে হচ্ছে ৫শ টাকা দিয়ে। এতে আমাদের হাজার হাজার টাকা খোয়া যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি থেকে আমরা কেমন করেই বা মুক্তি পাবো।
এদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারের চেম্বারে দালাল থাকার বিষয়ে স্ব স্ব রুমের চিকিৎসকের সাথে কথা বলতে গেলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তারা কথা বলতে রাজি হননি।
অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আশরাফুন নাহার মৌসুমী জানান, আমি অল্প কিছু দিন হল এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পেয়েছি। তাই এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালাল রয়েছে কি না আমি তা জানি না। তবে অভিযোগ যেহেতু উঠেছে সেহেতু বিষয়টা আমি ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।