1. admin@thedailydrishyapat.com : admin :
  2. thedailydrishyapat@gmail.com : TheDaily Drishyapat : TheDaily Drishyapat
  3. info@pratidinerdrishyapat.com : Pratidiner Drishyapat : Pratidiner Drishyapat
বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ

ভুল চিকিৎসায় নিভে গেল মঞ্জুরুলের চোখের আলো দিশেহারা পরিবার

সংবাদ প্রকাশক:
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ২৬ Time View

মো.শরিফুল আলম,ঈশ্বরগঞ্জ প্রতিনিধি:

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি  মঞ্জুরুল হক(২৮)। অভাবের সংসারে  পড়াশোনা করতে না পেরে ছোটবেলায় শেখেন ইলেকক্ট্রিক মিস্ত্রির কাজ। ২০০৮ সাল থেকে পেশাদার  রেফ্রিজারেটর হিসেবে কাজ করেই পরিবারের গ্লানি টানছেন তিনি। সাত ভাই-বোনের মাঝে  মঞ্জুরুল তৃতীয়। তার বড় দুই বোন। ফলে পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে চার বোনের বিয়েও তিনি দিয়েছেন। নিজেও করেছেন বিয়ে। বাবা-মা, স্ত্রী ও তিন কন্যা নিয়ে বেশ সুখেই  চলছিল সংসার। কিন্তু সেই সুখের  সংসার তছনছ করেছে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসা। ভুল চিকিৎসায় নিভে গেছে মঞ্জুরুলের চোখের আলো। সেই সাথে নিভে যাওয়ার পথে মঞ্জুরুলের তিন মেয়ের ভবিষ্যৎ। পাঁচ বছর বয়সী মঞ্জুরুলের বড় মেয়ে মরিয়ম পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। মেঝো মেয়ে মাহমুদার বয়স তিন বছর, আর ছোট মেয়ে জান্নাত সবেমাত্র হামাগুড়ি দেয়।মঞ্জুরুলের এ অবস্থায় পরিবারে সকল সদস্য দিশেহারা। আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে 
হাতে একটি ব্যাগভর্তি অনেকগুলো কাগজ  মঞ্জুরুলের ষাটোর্ধ বাবা মো. নূরুল ইসলাম ছেলে মঞ্জুরুল হককে নিয়ে আসেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবে। কিছু বলার আগেই হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন মঞ্জুরুল। কান্নাজড়িত কন্ঠে মঞ্জুরুল হক বলেন,’আমি  এই চোখ নিয়ে আর করতে পারবো না,আমার চোখ অন্ধ করে দিয়েছে। অন্ধ হয়ে বাইচ্ছ্যা থাকার চাইতে আমাকে মেরে ফেললেও ভালো হতো বলেই ফের কান্নায় ভেঙে পড়েন মঞ্জুরুল।
মঞ্জুরুলের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়ের মধ্যপালা গ্রামে।
এ বিষয়ে মঞ্জুরুল হক ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগও দিয়েছেন। অভিযোগপত্র নিয়ে ঘুরে এসেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশের কাছ থেকেও। মঞ্জুরুল ও তার পরিবার জানায়,গত ৭ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে বাজার যাওয়ার পথে মঞ্জুরুলের বাম চোখে বালির কনা পড়ে অসুস্থ হয়। পরদিন ৮ সেপ্টেম্বর পার্শবর্তী গৌরিপুর উপজেলার বোকাইনগর ডাঃ মুকতাদির চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান মঞ্জুরুল।  হাসপাতলের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মারুফ ওয়াহিদ তার সহযোগিকে দিয়ে মঞ্জুরুলের বাম চোখে সুইঁ দিয়ে দুটি ছিদ্র করে ফেলে। এসময় মঞ্জুরুলের  আর্ত-চিৎকারে লোকজন জড়ো হলে ডাক্তাররা বলাবলি করে চোখটি ছিদ্র হয়ে গেছে। তখন তড়িঘড়ি করে তার চোখে  ব্যান্ডেজ লাগিয়ে  বিদায় করে দেয় চিকিৎসকরা। বাড়িতে আসার পর মঞ্জুরুলের চোখে শুরু হয় তীব্র  ব্যাথা। পরদিন ফের সেই ডাক্তারের কাছে গেলে ব্যবস্থাপত্রে ওষুধ পরিবর্তন করে দেয়। কিন্তু এতেও ব্যাথা কমেনি। পরে গত  ১৪ সেপ্টেম্বর তৃতীয় দফায় ডাঃ মুকতাদিরকে বিষয়টি অবহিত করেন মঞ্জুরুলের বাবা। তিনি বলেন,মঞ্জুরুলের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। চোখটি উঠিয়ে ফেলতে হবে। তা না হলে ডান চোখও নষ্ট হয়ে যাবে। চিকিৎসকের এমন কথা শুনে মঞ্জরুল ও তার বাবা তখন অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে নিরুপায় হয়ে মঞ্জুরুল বাংলাদেশ চক্ষু হাসপাতাল এন্ড ইনস্টিটিউটের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ও কর্নিয়া কনসালটেন্ট ডাঃ মো. আমিরুজ্জামানের শরণাপন্ন হন। তিনি বলেন, আমার চোখটি ফুটো করে ফেলায় অপারেশন করতে হবে, হয়তো ভাগ্য ভালো হলে চোখের দৃষ্টি ফিরে আসতে পারে। পরে ওই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী  গত ১৯ সেপ্টেম্বর চোখের অপারেশন করানো হয়। কিন্তু এখনও মঞ্জুরুলের চোখের দৃষ্টি ফিরে আসেনি। মঞ্জুরুলের বাবা নূরুল ইসলাম বলেন,’আমার সু্স্থ্য-সবল ছেলেটাকে সারাজীবনের জন্য কানা(অন্ধ) বানাইয়্যা দিছে ওরা। আমার ছেলের মতো আর কোন বাবা-মায়ের সন্তানের যেন এমন না হয়। এই বিচারের লাগি ঈশ্বরগঞ্জ থানা  পুলিশের কাছেও গেছিলাম তারা কয়(বলে) এইডা তাদের কাম(কাজ) না। এখন কই গেলে বিচার পাইয়্যাম(পাব)। আমি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। এ বিষয়ে ডাঃ মুকতাদির চক্ষু হাসপাতালের চীফ কনসালটেন্ট অধ্যাপক  ডা. এ,কে,এম,এ মুকতাদিরকে মোবাইলে কল দিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিতেই বলেন,’ আমি এখন ওটিতে আছি। ঈশ্বরগঞ্জের মঞ্জুরুলে বিষয়টি নিয়ে আমি আপনার সাথে পরে কথা বলবো,এই বলেই কল কেটে দেন।ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন,’হাসপাতলটি যেহেতু গৌরিপুরের অধীনে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট থানাপুলিশ  বিষয়টি দেখবে। আমি গৌরিপুর থানার ওসিকে বলে দিব।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার বলেন, ‘মঞ্জুরুল তার বাবাকে নিয়ে গতকাল বুুধবার আমার অফিসে এসেছিল অভিযোগ দিতে। বিষয়টি আসলে খুবই দুঃখজনক। আমি মর্মাহত হয়েছি। হাসপাতালটি গৌরিপুর উপজেলায় হওয়ায় আমি ভোক্তভোগীকে গৌরিপুরের ইউএনও বরাবর অভিযোগ দিতে পরামর্শ দিয়েছি। পাশাপাশি গৌরিপুরের ইউএনওকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য আমি ফোনে বলে দিয়েছি।এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন  ডাঃ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন,’ আমি এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
প্রতিদিনের দৃশ্যপট ২০২৪
Theme Customized BY Kh Raad (FriliX Group)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com