শরিফুল আলম,ঈশ্বরগঞ্জ ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
আমার বাজানের লাগি(জন্য) মাছ দিয়ে শিমের তরকারি আর টমেটোর ঝুল রান্দিয়া (রান্না করে) রাখছিলাম। বাজান আমার মাদ্রসা থেকে আইয়্যা(এসে) ভাত খাইবো। অহন কে খাইবো ভাত?__এভাবেই ছেলে আব্দুল্লার লাশের পাশে আহাজারি করছিলেন মা অজুফা আক্তার (৩৮)। আজ(৮ নভেম্বর) শুক্রবার আনুমানিক সকাল সাড়ে আটটার দিকে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিদ্যুতায়িত হয়ে আব্দুল্লাহ ওরফে অপু(১৪) নামের এক মাদ্রসা ছাত্রের মৃত্যু হয়। আব্দুল্লাহ ওই ইউনিয়নের ইটাউলিয়া গ্রামের হযরত আলীর ছেলে। স্থানীয়,পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,হযরত আলীর ৪ ছেলে-মেয়ের মধ্যে আব্দুল্লাহ একমাত্র ছেলে। সবার বড় সন্তান আব্দুল্লাহ। আঠারবাড়ি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা পার্শ্ববর্তী কেন্দুয়া উপজেলার দারুল উলুম মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ। প্রতিদিন সকালে মাদ্রাসা থেকে খাবার খেতে বাড়িতে আসে আব্দুল্লাহ। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকাল ৮ টার দিকে মাদ্রাসা ছুটি দিলে বাড়ির দিকে রওনা দেয় আব্দুল্লাহ। পথিমধ্যে বাড়ির পাশে শামুকভাঙা নদীতে মাছ ধরতে বৈদ্যুতিক জল মোটরে বিদ্যু্ৎ সংযোগ করেছিলেন এলাকাবাসী। সেখানে আসা মাত্রই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় আব্দুল্লাহ। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। তখন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষাণা করে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল থেকে আব্দুল্লার মরদেহ থানায় নিয়ে আসে।
দারুল উলুম মাদ্রসার মুহতামিম আজিজুল হক বলেন,’আব্দুল্লাহ ক্লাসের মেধা তালিকায় ১ম ছিল। সকালে মাদ্রাসা ছুটির পর বাড়িতে খেতে যায়। ঘন্টাখানেক পর তার মৃত্যুর খবর শুনতে পাই। মেধাবী আব্দুল্লাহর মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত। শোকসন্তপ্ত পরিবারকে শান্তনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আল্লাহ পাক তার পরিবারকে এই শোক সইবার ধৈর্য দান করুন। সেই সাথে আমার সন্তানতুল্য ছাত্র আব্দুল্লাহকে জান্নাত নসিব করুন।এ প্রসঙ্গে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন,’ আব্দুল্লার পরিবার তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণার পর আমাদের খবর দেয়। খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহের সুরতহাল সম্পন্ন করে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।