সোহেল রানা, সিরাজগঞ্জ:
নতুন মাটির সড়ক। প্রবেশ মুখেই বিভিন্ন রংয়ের বেলুন ও পতাকা দিয়ে সুজজ্জিত করা হয়েছে। দুর থেকে যে কেউ দেখলে মনে হবে সড়ক উদ্বোধনে জমকালো কোন অনুষ্ঠান। সবই ঠিক আছে তবে অতিথি হচ্ছে আর দশটি সড়ক উদ্বোধনের মত না। এখানে মাটি কাটা শ্রমিকরাই অতিথি হয়ে ফিতা কেটে নতুন সড়ক উদ্বোধন করলেন। বলছিলাম সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার অবহেলিত সড়াতৈল গ্রামে সেচ্ছাশ্রমে নির্মীত দেড় কিলোমিটার সড়ক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কথা। শুক্রবার সকালে সড়কটি নির্মানের উদ্যোক্তা সমাজ সেবক নজরুল ইসলামের আয়োজনে এমন ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সমাজ সেবক, আইনজীবি, ব্যবসায়ী সহ সকলে উচ্ছাসিত ও আনন্দিত।
জানা যায়, সালদারবিল সংলগ্ন বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। আশপাশে যাতায়াতের কোনো রাস্তা নেই। ঘরে ফসল তুলতে কৃষকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। এছাড়া চলাচলের দুর্ভোগ কমাতে প্রায় দেড় মাস আগে স্বেচ্ছাশ্রমে দেড় কিলোমিটার সড়ক তৈরির কাজ শুরু করেছেন সড়াতৈল গ্রামবাসি। ইতিমধ্যে কাজ প্রায় শেষ হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সড়কটি নির্মানে এলাকাবাসি বারবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধ্বর্না দিয়েও কোন কাজ হয়নি। পরে এলাকাবাসি পরিকল্পনা করে সেচ্ছাশ্রমে সড়ক নির্মানের সিদ্ধান্ত হয়। পরে সবাই মিলে কাজ সেচ্ছাশ্রমে সড়কটি নির্মান করে। এতে পাঁচিল-এনায়েতপুর-সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক সহ শাহজাদপুর যাতায়াতের কষ্ট কিছুটা হলেও কমেছে। এখন আর শিক্ষার্থীদের বর্ষায় নৌকা যোগে অনেক পথ মাড়িয়ে স্কুল-কলেজে যেতে ও মাঠ থেকে ফসল ঘরে নিতে আনতে তেমন কষ্ট হবে না।
সড়ক নির্মাণে কাজে যুক্ত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মজুরি ছাড়াই তাঁরা কাজ করেছেন। গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে যাঁরা শ্রম দিতে পারেনি, তাঁরা আর্থিক সহযোগিতা করছেন। অনেকে আবার সড়ক তৈরির জমি দান করেছেন।
সড়কটি নির্মানের অন্যতম উদ্যোক্ত সমাজ সেবক নজরুল ইসলাম বলেন, গ্রামবাসির প্রচেষ্টায় সড়কটি সেচ্ছাশ্রমে নির্মান হয়েছে। দেড় কিলোমিটার সড়ক নির্মান একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এজন্য এখানে শ্রমিকরাই অতিথি ছিলেন। প্রধান অতিথি বলতে কেউ ছিল না। তাই সড়কটি স্থায়ী ও পাকা করনে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।