
দৃশ্যপট ডেস্ক:
সিরাজগঞ্জ জেলা সনাতনী যুব সমাজের উদ্যোগে ৫০১ কন্ঠে শ্রী মদ্ভগবদ্ গীতা পাঠ অনুষ্ঠিত হয়।
রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের শ্রী ঈশ্বর জিউ ও শ্রী শ্রী ঈশ্বর লক্ষী নারায়ন জিউ মন্দির (অর্জন গড়) প্রাঙ্গণে।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ ঘটিকায় যজ্ঞ দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান।জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পুরোহিত গনের মাধ্যমে সকাল সাড়ে ১০ ঘটিকায় এক যোগে ৫০১ কন্ঠে সনাতনী ধর্ম পুরোহিত গন গীতা পাঠ শুরু করেন।
পুরোহিত জীবন চক্রবর্তী বলেন, আমার জানা মতে আমাদের সিরাজগঞ্জ জেলায় এটাই প্রথম।জাতী, দেশের মঙ্গল কামনায় এই আয়োজন ।
গীতা পাঠ স্কুলের পরিচালক বিরেন্দ্র নাথ মাহাতো বলেন, আমি সারা বাংলাদেশে সনাতনী আলোচক হিসেবে প্রচার ও আলোচনা করে থাকি এ রকম উদ্যোগ এটায় জেলায় প্রথম।
লেখক ও গবেষক উজ্জ্বল কুমার মাহাতো বলেন, অর্জুনগড় ঐতিহাসিকভাবে প্রসিদ্ধ স্থান, এই স্থানে ৫০১ কন্ঠে গীতা পাঠ আয়োজনটি আমাকে মুগ্ধ করেছে। বর্তমানে সনাতনীদের জন্য এমন আয়োজন খুবই জরুরী, যা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া দরকার।
মানব ধর্ম প্রচারক সংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সনাতনী ধর্ম আলোচক আচারার্চ নরেন্দ্র নাথ বসাক বলেন,“শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতা শ্রীকৃষ্ণের বাণী। ওই সময়ে কুরুক্ষেত্রে যে যুদ্ধ হয়েছিল, সেটা ছিল ধর্মযুদ্ধ। সেই সময়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বুঝিয়েছিলেন যার মধ্য দিয়ে মানব সৃষ্টি এবং মানবতাকে ধরে রাখা, ধর্মকে ধরে রাখা, সত্যকে ধরে রাখা, মানুষের মঙ্গল করা, কল্যাণ করা ধর্মের কাজ। এটা যারা বিনষ্ট করে তারা ধর্মকে নষ্ট করে। গীতা পাঠের মাধ্যমে মানুষের প্রবৃত্তিকে সেভাবে জাগ্রত করা। তারা যাতে সৎপথে চলে ও জনকল্যাণে কাজ করে।” গীতা পাঠের উপলব্ধিতে সবাইকে ভালোবেসে একটি সুখের পৃথিবী গড়ে তোলাই তাঁদের ইচ্ছা বলেও জানান তিনি।
জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ভক্ত-পুণ্যার্থীরা যোগ দেন। সেই সাথে জপসহ পূজা-অর্চনা করেন।
এলাকার সনাতনী ধর্ম ভক্ত বৃন্দের দাবি আমরা চাই এই ধরনের আয়োজন প্রতি বছর হোক। এতে ধর্মের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে।” সেখানে এসে গীতার যে বাণী সেটা অনুভব করার সঙ্গে মানসিক শান্তি পেয়েছেন বলেও জানান তারা।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,জেলা বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ভিপি আয়নুল হক, আমিনুল বারী তালুকদার নিমগাছি ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ ও উপদেষ্টা জেলা বিএনপি, সুলতানা মাহমুদ দুলাল, সিরাজুল ইসলাম তোতা, কুদ্দুস মন্ডল, লিটন গুন , বাবলু সহ উপজেলা ও ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
গীতা পাঠ পরিচালোনা করেন সোনাতনী ধর্ম আলোচক শ্রীমতি রানী বসাক।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা জানান, হিন্দুদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র ও পৌরাণিক ধর্মগ্রন্থ হলো গীতা। এই গীতাকেই শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতা হিসেবেও চেনেন। গীতা পাঠ ও শ্রবণের জেরে একজন মানুষের গোটা জীবনই বদলে যেতে পারে।
এক সঙ্গে এত কন্ঠে গীতা পাঠের আয়োজন এই প্রথম বলে জানান আয়োজকরা।
আয়োজক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নিবাস চন্দ্র মাহাতো বলেন, বাংলাদেশের সমৃদ্ধি এবং যুদ্ধমুক্ত বিশ্ব শান্তি কামনায় এবং বৈদিক সনাতনী পরম্পরা জাগরণে ৫০১ কণ্ঠে পবিত্র ‘শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতা পাঠ’ এর আয়োজন করা হয়েছে। ৫০১ কণ্ঠে পবিত্র গ্রন্থ পাঠ তাদের জীবনে পাওয়া অনন্য এক অভিজ্ঞতা।
এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের আয়োজন সহযোগীতার জন্য এবং ধর্মীয় সম্প্রীতির পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানান ।