ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৩৩৩ জনে। এছাড়া গত অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৭৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সিনহুয়া।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা উপত্যকায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে ৩২ হাজার ৩৩৩ জনে পৌঁছেছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সোমবার এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ১০৭ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং বর্বর হামলায় আরও ১৭৬ জন আহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, এতে করে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে মোট মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩২ হাজার ৩৩৩ জনে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭৪ হাজার ৬৯৪ জন মানুষ।উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ কোনও ধরনের আশ্রয় ছাড়াই বসবাস করছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ত্রাণবাহী ট্রাক এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে।
এমন অবস্থায় দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে গাজা উপত্যকায় জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। পাস হওয়া এই প্রস্তাবটিতে গাজায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের হাতে আটক থাকা বন্দিদের দ্রুত ও নিঃশর্ত মুক্তির ব্যাপারটিরও উল্লেখ রয়েছে।
সোমবার জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর এই সংস্থার বৈঠকে প্রস্তাবটি ভোটের জন্য তোলার পর পরিষদের সব সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও যুক্তরাষ্ট্র ভোটদানে বিরত ছিল। তবে প্রস্তাবটির বিপক্ষে কোনো যুক্তি উপস্থাপন বা ভেটো ক্ষমতারও প্রয়োগ করেনি পরাশক্তি এই দেশটি।