নিজস্ব প্রতিবেদক:
“দক্ষিণা জানালা-উত্তরে দুয়ার, স্বপ্নের এ ছোট্ট কুটির মনোয়ারার ”। মানবিক সহায়তার নিজ ঘরেই এখন থাকবেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মনোয়ারা। অথচ কদিন আগেও ছিল ঠিকানাহীন। তাড়াশ বাসস্ট্যান্ডের একটি বন্ধ দোকানের সামনে দিনে ভিক্ষা করতেন, রাতে শুয়ে থাকতেন। বিশেষ করে নির্দিষ্ট কোন থাকার জায়গা না পেয়ে বসে বসে কাঁদতেন। (২৯ মার্চ) শুক্রবার বিকেলে ঘর হস্তান্তর করেন স্থানীয় সাংবাদিক ও উন্নয়ন কর্মী গোলাম মোস্তফা।
মনোয়ারা (৫১) জন্মেছিলেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের সিলনদহ গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল আজিজ। মায়ের নাম জামেলা খাতুন। বিয়ে হয়েছিল শাহজাদপুর উপজেলার তালগাছি গ্রামের জসিমদ্দীর সাথে। এখন তার বাবা-মা ও স্বামী কেউ বেঁচে নেই।
এদিকে ঘর পেয়ে মহা খুশি মনোয়ারা। প্রায় তিন দিন লেগে গেছে ঘরের কাজ সম্পূর্ণ হতে। এই তিন দিন সে ঘরের পাশে বসে থেকেছেন। চোখে না দেখলেও টিনের ঘর তৈরির শব্দ যেন তাকে এক সুখের অনুভূতির ছোঁয়া দিচ্ছিল। কেউ জিজ্ঞেস করলে হেসে বলে উঠতেন ‘ আমার ঘর হচ্ছে’। খুব বেশী নয়, একটু মানবিক সহায়তা এক জন অসহায় মানুষকে যে কী সুখ বয়ে এনে দিতে পারে মনোয়ার মুখের হাসি তা বলে দেয়।
অপরদিকে স্থানীয় সাংবাদিক ও উন্নয়ন কর্মী গোলাম মোস্তফা বলেন, আমরাই পারি মনোয়ারাদের জীবন বদলে দিতে। আমি চেষ্টা করেছি, আপনারা মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা সবাই পেড়েছি এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সহায় সম্বলহীন নারীর স্বপ্নের নীড় তৈরি করে দিতে। এ মহতী কাজে মূলত নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন তাড়াশ ইসলামিয়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম বিএসসি। তিনি বলেছিলেন, ‘ আপনি শুরু করেন, শেষটা দেখা যাবে’। তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটু খালি জায়গাতে তার ঘর তোলা হয়েছে। সেখানে তার মত অসহায় আরো অনেকে বসবাস করেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এ কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, মানুষের মানবিক সহায়তা এক মনোয়ারা নয়, বরং মনোয়ারাদের দুঃসহ জীবন খুব অল্প সময়ে বদলে দিতে পারে।