অনলাইন ডেস্ক:
৬ষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে সিলেটের চারটি উপজেলায় সকাল থেকে ভোটকেন্দ্রগুলো নিরুত্তাপ। এমন অবস্থায় ছাত্রলীগ কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এসময় দুই দফায় প্রায় ৩৫ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল।
বুধবার (৮ মে) দুপুর ১২টার দিকে সিলেট সদর উপজেলার খাদিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। তখন কেন্দ্রটি ভোটারহীন ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বেলা ১২টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দলবেঁধে নারীদের ৩টি বুথে ঢুকে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় নির্বাচনী কর্মকর্তারা ভয়ে প্রিসাইডিং অফিসারের কক্ষে চলে যান। খবর পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে স্ট্রাইকিং ফোর্স কেন্দ্রে অবস্থান করে। এসময় বিশৃঙ্খলার কারণে কোনো ভোটার উপস্থিত ছিল ।এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বাধীন স্ট্রাইকিং ফোর্স ওই কেন্দ্র ত্যাগ করে। পরে আবারো ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কেন্দ্রে ঢুকে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করে। এক পুলিশ সদস্য বাধা দিতে গেলে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন কর্মী সমর্থকরা। তারা পুলিশ সদস্যকে ধরে টানা হেঁচড়া শুরু করেন। এসময় উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে পুলিশের মারমুখী অবস্থানের কারণে নেতাকর্মীরা কেন্দ্র ত্যাগ করেন। ছাত্রলীগের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে কিছুক্ষণ আটকা পড়েন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ চৌধুরী। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে তিনি কেন্দ্র ত্যাগ করেন।
ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার দ্বিরাজ বর্মণ বলেন, দুপুরে ১২টার সময় একদল বহিরাগত যুবক ভেতরে ঢুকে জোরপূর্বক ভোট দেওয়ার চেষ্টা করে। তখন ভোট দানে নিয়োজিত কর্মকর্তারা নিরাপত্তার কারণে ব্যালট নিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারের কক্ষে গিয়ে অবস্থান নেন। বেলা ১২টা ২০ মিনিটে আবারো ভোটগ্রহণ শুরু হলেও বহিরাগতদের ঝামেলার কারণে ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয়। তরে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর ফের পৌনে ১টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।দ্বিরাজ বর্মণ আরও বলেন, ওই কেন্দ্রে ৪ হাজার ৪৭০ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ২০০ এবং নারী ভোটার ২ হাজার ২৭০ জন রয়েছেন। দুপুর ১টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ১১ শতাংশ।
কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা শাহপরান থানার ওসি হারুনুর রশিদ বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। আমরা অতিরিক্ত পুলিশ কল করেছি। তবে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম।
বেলা সোয়া ১টার দিকে সদর উপজেলার বিআরডিটিআই কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রটি চার দেয়ালের ভেতর সুরক্ষিত। ছিমছাম পরিবেশ। কিন্তু ভোটার না থাকায় নির্বাচনী কাজে নিয়োজিতরা বারান্দায় বসে ভোটারের পথ চেয়ে আয়েসে সময় পার করছেন।
কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং অফিসার দুর্জয় রায় টুন বলেন, কেন্দ্রে মোট ২ হাজার ২৬৬ জন ভোটার রয়েছেন। এরমধ্যে ১ হাজার ২০৪ জন পুরুষ ও ১ হাজার ৬১ নারী ভোটার রয়েছে। কেন্দ্রে পুরুষ-মহিলা ৩টি করে বুথ রয়েছে। বেলা সোয়া ১টা পর্যন্ত সাড়ে ৭ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে।এদিকে, সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, সিলেট সদর উপজেলার কয়েকটি কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা হয়েছে। ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকায় প্রার্থীর পক্ষের লোকজন ভোট দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এছাড়া দুপুরে নগর সংলগ্ন দলদলি চা বাগান বিদ্যালয় কেন্দ্র দখলের চেষ্টায় কিছুক্ষণ ভোটগ্রহণ স্থগিত ছিল। পরে আবার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। তবে বিশৃঙ্খলার দায়ে কাউকে আটক করা হয়নি। কেবল নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চলা বেশ কিছু মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।