নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
মেহেরপুরের গাংনীতে স্বামীর সাথে সংসার করতে স্বামীর বাড়িতে স্ত্রী অনশন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৯ মে), মধ্য রাত ২-টার দিকে গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের আজান গ্রামের আকালী হোসেনের ছেলে সাগরের বাড়িতে অনশন করে একই গ্রামের সাবিরুল ইসলামের মেয়ে সাদিয়া সুলতানা।
সরেজমিনে আজান গ্রামে সাগরের বাড়িতে গিয়ে তার শয়নকক্ষে সাদিয়াকে বসা অবস্থায় পাওয়া যায়। এসময় বাড়ির আঙ্গিনায় দেখা মেলে অসংখ্য নারী-পুরুষের।
সাদিয়া জানায়, সাগরের সাথে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। আমরা কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে বন্ধনেও আবদ্ধ হয়। কিন্তু আমার পরিবারের সদস্যরা এ বিয়ে মেনে না নেওয়ায় রাতের আধারে পালিয়ে আসি স্বামীর সাথে সংসার করতে। আমি তার সাথে সংসার করতে চাই। সে জানায়, সাগরকে স্বামী হিসেবে পাবে এমন আশায় এবং অভিভাবকদের পরামর্শে মিথ্যা ধর্ষন মামলা করি সাগরের নামে। কিন্তু দেখলাম এভাবে চলতে থাকলে সাগরকে পাওয়া হবেনা। তাই রাতের আধারে পরিবারের সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলে আসা।
সাগর জানান, রাত ২ টার দিকে সাদিয়া আসে আমার বাসায়। আমরা দু’জন দু’জনকে ভালবেসে বিয়ে করেছি। সুতরাং সে আমার বাসায় অবস্থান বা অনশন করেছে এতে আমার কোন আপত্তি নেই। তবে মিথ্যা ধর্ষন মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে এবং মিথ্যা মামলাকারীদের শাস্তির দাবী জানান তিনি।
এবিষয়ে কথা বলতে সাদিয়ার বাবাকে বাসায় পাওয়া না যাওয়ায় সাদিয়ার দাদা ফরজ আলী ও চাচার সাথে কথা বললে সাদিয়ার বিয়ের বিষয়ে তাদের কোন দ্বিমত নেই বলে জানায়। যদিও দুই বছর পূর্বে মিথ্যে ধর্ষণ মামলা করেছিলেন সাগরের বিরুদ্ধে কিন্তু বারবার কোর্টে হাজির না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। এবিষয়ে সাদিয়ার দাদা ফরজ আলী জানান, রাজনৈতিক কারণে সেসময় মামালাটা হয়েছিল কিন্তু এখন তাদের কোন অভিযোগ নেই। কোর্টের মামলার নিষ্পত্তি করা হবে বলেও তিনি জানান। এবিষয়ে নাকি উকিলের সাথেও কথা হয়েছে।
এলাকাবাসীর সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ২ টার দিকে সাগরের বাসায় এসে দরজা নক করতে থাকে সাদিয়া। ইতিপূর্বে আরও ২ বার এভাবে আসলে তার অভিভাবকরা জোরপূর্বক সাদিয়াকে নিয়ে যায় এবং সাগরকে মারধর করে। এমনকি মিথ্যা ধর্ষন মামলা দিয়ে জেলের ঘানি টানায়। অবশেষে সাদিয়া আবারও সাগরের কাছে ফিরে আসে।
এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মফিজুর রহমান জানান, সাদিয়ার দাদা ফরজ আলী এসেছিল সকালে বিষয়টি নিয়ে মিমাংসার জন্য কিন্তু এখন অবধি আর কোন খোঁজখবর নেই। যদি আবারও জানায় তবে সন্ধায় বসে সমাধান করা হবে।
তবে সন্ধায় বসে মিমাংসার নামে থানা পুলিশ দিয়ে আবারও ফাঁসানো হবে সাগরকে এমন গুঞ্জনও রয়েছে এলাকায়। গ্রামের প্রতিটা চায়ের দোকান ও মাচায় মাচায় চলছে সাদিয়া ও সাগরকে নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়। তবে এর একটা সুষ্ঠু সমাধান হবে এবং নতুন করে আর যেন সাগরকে নিয়ে নতুন কোন নাটক না হয় এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।