নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিরাজগঞ্জে পুলিশের অবহেলায় জহুরুল ইসলাম নামে এক হত্যাচেষ্টা মামলার আসামী হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বারবার বলা স্বত্বেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার না করে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ বাদীপক্ষের। সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের পাঁচঠাকুরী গ্রামের রাজু আহম্মেদ, আশেকুর রহমান ইমনসহ ভুক্তভোগীরা এমন অভিযোগ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে স্থানীয় মটিয়ারপুর ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য পদকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে সাবেক ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলামের নেতৃত্বে মোঃ বাচ্চুকে (৪৫) ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। এতে বাচ্চু গুরুতর আহত হন। এ সময় বাচ্চুর আত্মীয় মুকুল ও আবু কালাম এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারপিট করা হয়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হলে অন্তত ৭ জন আহত হন।
আহতদের মধ্যে মো. বাচ্চুকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন মুকুল সেখ ও আব্দুল কালাম। আহত অন্যান্যরা হলেন, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মমিন মেম্বর, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার খান, রাজু আহম্মেদ ও সেলিম রেজা। এ ঘটনায় বাচ্চুর ভাই আব্দুল বাছেদ বাদী হয়ে জহুরুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
আহত রাজু আহমেদ জানান, পাঁঠাকুরী বাজারে জহুরুল ইসলামের একটি অফিস আছে যেখানে সেটা সিন্টিকেড অফিস। যত অবৈধ কারবার সেখানে হয়। ছোনগাছা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের এদের পৃষ্ঠপোষকতা করে। জহুরুল ইসলা, জিন্নাহ চেয়ারম্যান ও রাজ্জাক ওই অফিসে বসে জুয়াও খেলে।
আমরা চারজন পাঁচ ঠাকুরী বাজারে বসে চা খাচ্ছিলাম। এ সময় রাজ্জাক এসে বসে চা খায়। এরপর জহুরুলের অফিস থেকে জহুরুল, সুমন, ইলিয়াস, মনির, রাজ্জাক, জামিলসহ ১৫/২০ জনের দল এসে আমাদের উপর হামলা করে। এতে ৭ জন আহত হন। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আশিকুর রহমান ইমন অভিযোগ করে বলেন, জহুরুল ইসলাম নাটক সাজিয়ে নিজেও হাসপাতালে ভর্তি হন। তখন আমরা পুলিশকে বলি তাকে আটক করতে। কিন্তু পুলিশ আটক করেননি। এদিকেব পুলিশ মামলা নিতে গরিমসি করে। আমরা শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় এজাহার দিয়েছি। কিন্তু মামলা রেকর্ড হয় পরদিন সকালে।
এ বিষয়ে সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাসিবুল্লাহ বলেন, মামলার এজাহার আমরা রাতেই গ্রহণ করেছি। কিন্তু সার্ভার সমস্যা হওয়া ইনপুট দিতে দেরি হয়।
সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. রেজওয়ানুল হক বলেন, মামলা রেকর্ড না হলে আমরা কাউকে আসামী গ্রেপ্তার করতে পারি না। হাসপাতালে থাকাবস্থায় তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া যায়। কিন্তু মামলা করতে আসছে জানতে পেরে আমরা তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আগেই তারা সেখান থেকে পালিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, মামলা দুপক্ষই করেছে, দুপক্ষেরই একজন করে গ্রেপ্তার আছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।