1. admin@thedailydrishyapat.com : admin :
  2. thedailydrishyapat@gmail.com : TheDaily Drishyapat : TheDaily Drishyapat
  3. info@pratidinerdrishyapat.com : Pratidiner Drishyapat : Pratidiner Drishyapat
বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ

পিতৃহারা একমাত্র ছেলের দৃষ্টি ফিরে পেতে বিধবা মায়ের আকুতি

সংবাদ প্রকাশক:
  • Update Time : সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪
  • ৬৬ Time View

 আমিরুল ইসলাম,কামারখন্দ :

একমাত্র এখন এই সন্তানই আমার ভরসা। এই সন্তানকে যদি আল্লাহ এবং এই সরকার যদি কোন ব্যবস্থা করে দেয় তাই আমার ভরসা, তা ছাড়া আমার ভরসা কিছুই নাই। একমাত্র সন্তান ধরে নিয়েই আমি পড়ে আছি। যে সরকার উঠছে এবং ছাত্রদের কাছে এটাই আমি কামনা করি । একমাত্র ছেলের চোখের দৃষ্টি ফিরে পেতে এবং চিকিৎসার জন্য অর্থ জোগাড় করতে না পেরে কান্নাজরিত কন্ঠে এভাবেই আকুতি করছিলেন সিরাজগঞ্জের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের চালানো ছোড়া গুলিতে এক চোখের দৃষ্টি হারানো জুবায়ের হোসেন জিহাদের বিধবা মা হাসি বেগম।

জুবায়ের সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার হায়দারপুর গ্রামের মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে এবং উপজেলার সরকারি হাজী কোরপ আলী মেমোরিয়াল কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

জুবায়ের বলেন ১৬ ই আগষ্ট বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল নিয়ে সিরাজগঞ্জে ইসলামীয়া কলেজ থেকে বের হয়ে রেলগেটের কাছে আসলে এই সময় পুলিশের লাঠিচার্জে মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে এরপর পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ার সেল কাঁদানি গ্যাস ছোড়ে এক পর্যায় একটা ছোড়া গুলি এসে আমার বাম চোখে ঢোকে তারপর আমি পড়ে যাই। এরপর আমি সহপাঠীদের সহযোগিতায় এম এ মতিন চক্ষু হাসপাতলে প্রাথমিক চিকিৎসা নেই। সেখানকার চিকিৎসকরা বলে ওর চোখের কন্ডিশন ভালো না এখানে হবেনা ঢাকায় নিয়ে যান তাড়াতাড়ি। তারপর ঢাকার একটা চক্ষু হাসপাতালে জরুরীভিত্তিতে অপারেশন করা হয়। সেই অপারেশন করার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাম চোখে কিছুই দেখতে পাই না। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডাক্তাররা আমাকে বলেছে এখনো তিনটা অপারেশন করতে হবে চোখের জন্য। উনারা আরো বলেছেন অপারেশনের পর আল্লাহ যদি চায় তো তোমার চোখের দৃষ্টি ফিরে আসবে না হলে কিছুই করার নেই আমাদের। আমি চাচ্ছি আমার চোখের দৃষ্টি ফিরে আসুক। এখন পর্যন্ত আমার এটাই চাওয়া আর কিছু চাওয়ার নেই।

জুবায়ের হাসানের মা হাসি বেগম বলেন, এই ছেলেকে পাঁচ মাস বয়স রেখে ১৮ বছর আগে ওর বাবা মারা যান।আমার তিনটা মেয়ে একটা ছেলে মেয়েগুলোকে বিয়ে দিয়েছি অনেক কষ্টে অল্প কিছু জমি ছিল সেটা বিক্রি করে। এখন এই ছেলেকে নিয়েই খুবই কষ্টে চলতেছি। হাঁস-মুরগি লালন পালন করে যেটুকু আয় হয় সেটুকু দিয়ে চলি পাশাপাশি ছেলে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে যদি ভালো রেজাল্ট করে ঢাকায় কোন কলেজে ভর্তি হয়ে পাস করে বের হয়ে একটা চাকরি করলে আমার দুঃখ যাবে। তাতো ছেলে আন্দোলনে একটা এক্সিডেন্ট করে আসলো। কি আর বলবো সেদিন থেকেই তো আমি নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করতেছি।

তিনি আরো বলেন, এখন অনেক টাকার ব্যাপার সেটার ব্যবস্থা নাই জন্যেই তো হাসপাতাল থেকে চলে আসলো। এখনো তিনটা অপারেশন আছে যেখানে দুই আড়াই লাখ টাকা খরচ হবে তারপর চোখের লেন্স পাল্টাতে হবে। এগুলোর ব্যবস্থা যদি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যে সরকার আসলো সেই সরকার যদি আমার ছেলের পিছনে দাঁড়ায় তাহলে হয়তো আমার ছেলের চোখের দৃষ্টি ফিরে আসতেও পারে তাদের কাছে এটাই আমার কাম্য। ছেলের এই অবস্থায় সরকারি চাকুরি পাবে কিনা সন্দেহ। আমি ওকে কোনো কাজেই খাটাতে পারবোনা। সরকার হইছে ছাত্র ছাত্রীরা রয়েছে তারা যদি কোনো কর্ম করে দেয় তাহলে আমার জন্য ভালো নইলে সারাজীবন আমার দুঃখ কষ্ট পোহাতে হবে। আমি স্বামী হারা হয়ে ১৮বছর ধরে ছেলেকে অবলম্বন করে বেচে আছি।

আন্দোলনে জুবায়ের সহপাঠী রুকাইয়া বলেন, ১৬ তারিখে যখন আমরা সিরাজগঞ্জ ইসলামিয়া কলেজ থেকে একটা মিছিল বের করি ওইখানেই আমরা পুলিশি বাধার সম্মুখীন হই সেই বাঁধা পেরিয়ে আমরা আরো সামনের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশের অনেক ফোর্স এসে আবারও বাঁধার সৃষ্টি করে এবং তারা আমাদের ওখানে গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে একটা ছোড়া গুলি ওর বাম চোখে লাগে তখন আমরা ওকে ধরাধরি করে নিয়ে এমএ মতিন চক্ষু হাসপাতালে করি। সেখানে যথাযথ চিকিৎসা না থাকায় তাকে ঢাকাতে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা সরকারে কাছে আবেদন করছি ওর যে পারিবারিক অবস্থা তাতে ওর চিকিৎসা করার সামর্থ্য তাদের নাই । ওর যে চোখের সমস্যা সেটা সমাধান করার জন্য যেন চেষ্টা করা হয় এটাই আমার আমাদের চাওয়া।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
প্রতিদিনের দৃশ্যপট ২০২৪
Theme Customized BY Kh Raad (FriliX Group)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com