নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁয় আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে ভূয়া সার্টিফিকেট দিয়ে প্রাইমারি বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে আলাউদ্দীন প্রাং নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযোগ সদর উপজেলার শৈলগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শারমীনের যোগসাজসে সভাপতির পদটি ভাগিয়ে নেন তিনি। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে চলতি বছরের মার্চ মাসে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করছেন আমিনুল ইসলাম নামের এক সচেতন অভিভাবক।
অভিযোগ সূত্রে যায়, ২০২৩ সালের ২২ অক্টোবর শৈলগাছি প্রাইমারি বিদ্যালয়ে সভাপতি নিয়োগের সময় ভূয়া ডিগ্রি পাসের সার্টিফিকেট তৈরি করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শারমীন এথন্সের কাছে জমা দেন মৃত কছিমউদ্দীন এর ছেলে আলাউদ্দীন প্রাং। এরপর আওয়ামী লীগ করার প্রভাব খাটিয়ে জোর করে বিদ্যালয়টির সভাপতির পদ ভাগিয়ে নেন তিনি। এদিকে আলাউদ্দিন বিদ্যালয়ের সভাপতি হলেও তার কোনো সন্তান সে বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেনা। তবে তার এক নাতী সে বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আলাউদ্দীন সভাপতি হওয়ার জন্য ‘আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি’ থেকে ডিগ্রি পাসের একটি সার্টিফিকেট জমা দেন। যেখানে তারিখ দেয়া আছে ২০১৩ সালের ২৮ মে। যার রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার ১১৩২৫০৯২২২ ও রোল নাম্বার ১১৩২৫০। এবং ৪ পয়েন্টের মধ্যে ৩.৫০ পেয়ে পাশ দেখানো হয়। অথচ দেশের পরিচিত এক গনমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় ২০১৩ সালে ডিগ্রি পাশ করা আলাউদ্দীন যে ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন সেই ‘আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি’ সাময়িক অনুমতি পত্রের শর্ত না মানা এবং গুনগত মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় সরকারি স্মারক জারির মাধ্যমে ২০০৬ সালে স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তার আলাউদ্দিনের পাশের আগেই তাকে সনদ দেওয়া শিক্ষা পতিষ্ঠান ‘আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি’ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, আলাউদ্দীন প্রাং নিজেকে এসএসসি পাস বলে দাবী করে। কিন্তু হঠাৎ করে ডিগ্রি পাস কিভাবে হলো সেটি রহস্যময়। তাই আমরা মনে করি স্কুলে সভাপতি হওয়ার জন্য যে সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন, সেটি জাল। তার সার্টিফিকেট যথাযতভাবে যাচাই করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।
অভিযোগকারী আমিনুল ইসলাম বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া ও সনদ সবগুলোই অনিয়মভাবে করা হয়েছে। কোনো স্বচ্ছতা নেই। আমি জড়িতদের শাস্তির দাবি করছি। সেই জন্য সচেতন নাগরিক হিসেবে অভিযোগ দিয়েছি।
বিদ্যালয়টির সাবেক (বর্তমানে তিনি বদলি হয়ে চলে গেছেন) প্রধান শিক্ষক শারমীন আক্তার জানান, আসলে সনদটি সঠিক, নাকি জাল, সেটা খোঁজ নেওয়া হয়নি। যার কারণে যাচাই-বাছাই করা হয়ে ওঠেনি।
আলাউদ্দিন প্রাং এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে আপনাদের এত বেশি গভীরে যাওয়ার দরকার নেই। সবকিছু ঠিক আছে দাবি করে তিনি আরও জানান, পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ম মেনেই হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগটির ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে যথাযত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।