নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আব্দুল জলিল হেমো ডায়ালাইসিস ইউনিটে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসময় ওই ইউনিটে থাকা অফিস সহকারি (এমএলএসএস) সুমন আলীকে চেতনানাশক স্প্রে করায় ঘটনার পর থেকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছে। রোববার ১লা সেপ্টেম্বর ভোর ৫টার দিকে হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটে এ ঘটনা ঘটে। সুমন আলী সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের বাসীন্দা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতিত হাসপাতালের আব্দুল জলিল হেমো ডায়ালাইসিস ইউনিটে সকাল ৬টা থেকে কিনডি রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়। প্রতিদিনের মতো সুমন আলী ওই ইউনিটে ভোরে এসে বেড পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা করাসহ ইউনিটে দায়িত্বরত নার্স/সেবিকাদের সহযোগীতা করেন।
রোববার ভোরে ইউনিটের পেছনের দরজা দিয়ে তিনি প্রবেশ করছিলেন। এসময় আগে থেকে ওত পেতে থাকা দৃর্বত্তরা তাকে স্প্রে করলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। দৃর্বত্তরা ইউনিটে প্রবেশ করে দুইটি কক্ষে তালা লাগানো থাকায় কাচের দরজা ভেঙে ফেলে। এসময় ওই কক্ষের ভেতরে থাকা আলমারির ড্রয়ার ভেঙে নগদ ৫০ হাজার টাকা চুরি করে। সকাল ৬টার দিকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা সুমনকে অচেতন অবস্থায় দেখে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে অবগত করে। ঘটনার পর কর্তৃপক্ষরা এসে সুমনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর থেকে অচেতন অবস্থায় রয়েছে সুমন।
ওই ইউনিটের দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স মিমি বলেন, সকাল ৬টা থেকে আমাদের সেবার কার্যক্রম শুরু হয়। তবে তার আগেই আমাদের ইউনিটে আসতে হয়। ভোরে রোগীরা আমাকে ফোন করে বলে সুমন অচেতন এবং ভেতরে কাঁচের দরজা ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। এছাড়া আলমারি ও টেবিলের ড্রয়ারগুলো খোলা ছিল। পরে সুমনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নওগাঁ মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক (মেডিসিন) ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, সুমন আলীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখনো অচেতন অবস্থায় রয়েছে। চিকিৎসা চলমান রয়েছে। কয়েকটি পরীক্ষা(টেস্ট) দেয়া হয়েছে। আগামী ২-১ দিনের মধ্যে জ্ঞান ফিরবে বলে মনে করা হচ্ছে।
নওগাঁ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡বাবধায়ক ডা. মো. জাহিদ নজরুল চৌধূরী বলেন, আব্দুল জলিল হেমো ডায়ালাইসিস ইউনিটটি হাসপাতালে হলেও এটি মুলত মার্কেন্টাইল ব্যাংক দ্বারা পরিচালিত হয়। ওই ইউনিটে চুরির ঘটনা ঘটেছে। কিছু টাকা চুরি হয়েছে। তবে ইউনিটের ভিতরে থাকা চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম, কম্পিউটার ও কাগজপত্র অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া যাকে অচেতন করা হয়েছে তার মোবাইল অক্ষত রয়েছে। তবে তার জ্ঞান ফিরলে আরো কিছু তথ্য পাওয়া যাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে তারা চুরি করার উদ্দেশ্যে এসেছিল। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
চুরির ঘটনায় কোনো অভিযো পাননি বলে মুঠোফোনে কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আব্দুল ওয়াদুদ। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে যথাযথভাবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তারপরও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।