1. admin@thedailydrishyapat.com : admin :
  2. thedailydrishyapat@gmail.com : TheDaily Drishyapat : TheDaily Drishyapat
  3. info@pratidinerdrishyapat.com : Pratidiner Drishyapat : Pratidiner Drishyapat
বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ

তাড়াশের চলনবিলের শুটকি পল্লীতে কাঁচা মাছের তীব্র সংকট

সংবাদ প্রকাশক:
  • Update Time : শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৭৪ Time View

সাব্বির মির্জা, তাড়াশ(সিরাজগঞ্জ) প্রতিবেদক:

চলনবিলের বিভিন্ন এলাকার শুটকি পল্লী গুলোতে এ বছর কাঁচা মাছের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। হাতেগোনা দু’চারজন ব্যবসা শুরু করলেও বেশির ভাগ শুটকি মাছ ব্যবসায়ী এখনো ব্যবসা শুরুই করতে পারেননি। আর যারা কাঁচা মাছের দাম বেশি হওয়ায় যারা ব্যবসা শুরু করেছেন তাদের অধিকাংশই লোকসান গুনছেন।

প্রতিবছর সাধারণত ভাদ্র মাস থেকে এ এলাকায় সীমিত আকারে মাছ শুকানোর কাজ শুরু হয়। পানি কমার সাথে সাথে বাড়তে থাকে মাছের যোগান। এ বছর আশ্বিন মাসের প্রথম দিকেই বিলগুলো প্রায় শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিলের পানি কমে আসলেও খুব একটা মাছ ধরা পরছে না চলনবিল এলাকার জেলেদের জালসহ মাছ ধরার অন্য উপকরণগুলোতে। কিছু শুটকি ব্যবসায়ী সীমিত পরিসরে মাছ শুকানোর কাজ শুরু করলেও অনেকেই এখনো শুটকির চাতাল স্থাপন করেননি। 

বিলের পানিতে মাছ নেই বললেই চলে। অন্যান্য বছর কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে পুরোদমে মাছ শুকানোর কাজ চললেও এবার সেসময় বিলে পানিই থাকবেনা এমন আশংকা জেলে ও শুটকি মাছ ব্যবসায়ীদের। সরেজমিন চলনবিলের তাড়াশ উপজেলার মহিশলুটি এলাকার শুটকি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এ চিত্র।

শুটকির মৌসুম শুরু হলেও চলনবিল এলাকার শুটকি শ্রমিকদের ব্যস্ততা নেই। অন্যান্য বছর এ সময়ে সকাল থেকে রাত অবধি মাছ কেনা, ধোয়া, চাতালে শুকানো ও বাছাই করে পৃথক করার কাজে ব্যস্ত থাকতেন চলনবিল এলাকার শত শত নারী ও পুরুষ শুটকি শ্রমিক। 

চলনবিলের মাঝ দিয়ে নির্মিত বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে চলাচলের সময় মহিষলুটি এলাকা অতিক্রমকালে যে কারো নাকে লাগতো শুটকি মাছের গন্ধ। এবার চিত্র ভিন্ন। মহিষলুটি ছাড়াও চলনবিলের আত্রাই, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, গুরুদাসপুর, সিংড়া, হালতী, লাহিরী মোহনপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় মাছ শুকানো হলেও প্রায় সর্বত্রই চলছে মাছ সংকট।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলনবিল এলাকার উল্লেখযোগ্য ৪৮টি বিল, ১৪টি খাল ও ১১টি নদীতে একসময় প্রচুর পরিমানে ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যেতো। জেলেরা বিভিন্ন ধরণের মাছ ধরার উপকরণের সাহায্যে মাছ ধরতো। তখন অভাব কি জিনিষ বুঝতো না তারা। বর্ষাকালে মাছ ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দিতো। বর্ষার শেষ দিকে এসে উদ্বৃত্ত মাছ শুটকি করতো। উত্তরাঞ্চলের সৈয়দপুর, নিলফামারীসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে পাঠানো হতো শুটকি মাছ।

কালের বিবর্তনে অনেক প্রজাতির মাছই এখন বিলুপ্তির পথে। মাছের প্রজাতি ও পরিমান কমে গেলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতেও এ এলাকার প্রায় এক’শ শুটকি ব্যবসায়ী এবং হাজার হাজার শুটকি শ্রমিক মাছ শুকানোর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। কিন্তু মাছ সংকটের কারণে এবার ব্যবসা শুরু করতে পারবেন কি না তা নিয়ে শঙ্কিত শুটকি ব্যবসায়ীরা। তবে আশার কথা, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পুকুরে মাছ চাষের পরিধি ও উৎপাদন বাড়ছে।

প্রায় বিশ বছর যাবত চলনবিল এলাকায় শুটকি মাছের ব্যবসা করেন মহিষলুটি গ্রামের আলতাব হোসেন তিনি জানান, অন্যান্য বছর ভাদ্র মাসেই আমাদের ব্যবসা পুরোদমে শুরু হয়ে যায়। এ বছর কেবল মাত্র শুটকি চাতাল স্থাপনের কাজ শুরু করেছি। বিলের পানি কমে আসছে। এ বছর মাছ কম এটা নিশ্চিত তবে কতটা কম হবে তা এখনি বলা যাচ্ছে না। মাছ কম হলে দাম বেশি হয়। 

তিনি আরো জানান, ভারতে চলনবিল এলাকার পুটি মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। নীলফামারী, সৈয়দপুর, রংপুরের মোকামে মাছ পাঠাতে আমাদের অনেক টাকা খরচ পরে যায়। মাছ সংরক্ষণের সুবিধায় সীমিত আকারে লবণ দেয়া হয়। শুটকি মাছের ব্যবসা ভাগ্যের উপর নির্ভর করে। চলনবিল এলাকায় প্রক্রিয়াজাত করা শুটকি মাছ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় এবং কাছাকাছি বড় শুটকির মোকাম না থাকায় শুটকি ব্যবসায়িরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

দেবীপুর গ্রামের শুটকি মাছ ব্যবসায়ী আজমল হোসেন জানান, বর্তমানে পুটি ও চাদা মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এ মাছগুলো ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি কিনছেন তারা। চার মণ মাছ শুকালে এক মণ শুটকি মাছ পাওয়া যায়। সৈয়দপুরের মোকামে শুটকি পুটি ও চাদা মাছ আকার ভেদে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত লোকসানে রয়েছেন তিনি। মাছ সংকটের কারণে অনেকে এখনো ব্যবসা শুরুই করেননি। 

মান্নান নগর এলাকার আরেক শুটকি ব্যবসায়ী আসলাম হোসেন জানান, বিলে মাছ নেই। চায়না-সহ অন্যান্য নিষিদ্ধ জাল দিয়ে বিল থেকে অধিকাংশ মা মাছ ধরে নেওয়া হয়েছে। ফলে কমেছে পোনা উৎপাদন। তাই মাছ সংকট এত তীব্র হয়েছে।

এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো মশগুল আজাদ বলেন, এ বছর বর্ষা ও বৃষ্টির পানি কম হওয়ায় বিলের খোলা জলাশয়ে প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে ওঠা মাছের পরিমান কম হয়েছে। তবে পুকুরে চাষকৃত মাছের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে বেশি হবে আশা করছি।  

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
প্রতিদিনের দৃশ্যপট ২০২৪
Theme Customized BY Kh Raad (FriliX Group)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com