আমিরুল ইসলাম, কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ):
গাম্বুরা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে একটি মুরগির খামারে গত তিন দিনে পাঁচ হাজার সোনালি জাতের মুরগি মরে গেছে। এতে মুরগির খামারের মালিক আব্দুর রাজ্জাক নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের খামারের মালিক প্রবাস ফেরত আব্দুর রাজ্জাকের খামারে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়।
জানা যায়, প্রবাসের জীবন শেষে গ্রামের বাড়িতে এসে নিজের জমির ওপর আব্দুর রাজ্জাক মুরগির খামার করেন। খামারের ব্যবসায় দিনকাল তার ভালোই যাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত মঙ্গল, বুধ এবং বৃহস্পতিবার খামারে থাকা সাড়ে সাত হাজার মুরগির মধ্যে পাঁচ হাজার সোনালি জাতের মুরগী মারা যায়। এতে তার প্রায় ১৩-১৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
খামারি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন শেষে দেশে এসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা দিয়ে এই খামারটি গড়ে তুলি। ২০২২ সাল থেকে খামারে মুরগির ব্যবসা করে আসছি। এ পর্যন্ত ৪-৫ বার খামারে মুরগি তুলে তা বিক্রি করে কিছু টাকা আয় করতে পেরেছিলাম। কিন্তু এবার আমার প্রায় ১৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তা পূরণ করতে আমার সারাজীবন লেগে যাবে।
তিনি আরও বলেন, এ বছরের ২য় ধাপে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার মুরগির বাচ্চা দিয়ে শুরু করা খামারে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক জামতৈল শাখা থেকে ১১ লাখ টাকা লোন নিয়েছিলাম। দীর্ঘ ৪ মাস মুরগি লালন-পালন করার পর এক একটা মুরগির ওজন হয়েছিল প্রায় এক থেকে দেড় কেজি।
এ মুরগিগুলো অল্পদিনের মধ্যেই বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫ হাজার মুরগি মারা যায় এবং বাকি মুরগিগুলো খুব অল্প দামে স্থানীয় বাজারে এবং ঢাকায় বিক্রি করি। এখন আমি কিস্তি দিব কিভাবে আর ব্যবসা করব কিভাবে এটা ভেবে পাচ্ছি না।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদের ভ্যাটেরিনারি সার্জন ডা. ফরহাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, উপজেলার অনেক খামারি আছেন যারা ডিলারদের কথামতো খামার করেন, আমাদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ করেন না। খামারে মুরগি অসুস্থ হলে ওনারা ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওষুধ খাওয়ান। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসেও আসেন না খামারিরা। এজন্য অনেক সময় আমরাও বুঝতে পারি না কোথায় কখন কি হচ্ছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনিরুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে খামারি আমাদের জানাননি। আমরা আজকে জানতে পেরে সেখানে লোক পাঠিয়েছি। মুরগি মারা যাওয়ার কারণ ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।