সাব্বির মির্জা, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
নেমেছে চলনবিলের পানি।বিলে মিলছে ছোট মাছ। আর সেই মাছ খেতে ঝাঁকে ঝাঁকে চলনবিলে আসছে নেমে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। পাখির এমন অবাদ বিচরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে শিকারিরা।
বিষটপ, জাল, পড়শিতে আটকে শিকারের খাঁচায় বন্দি হচ্ছে এসব ধরনের পাখি। এতে করে একদিকে জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে, অপরদিকে ফসলি জমিতে ক্ষতিকর পোকার আক্রমণও বাড়ছে।
সূত্রমতে, রাজশাহী বিভাগের পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার ৯টি উপজেলার সমন্বয়ে চলনবিল অঞ্চল বিস্তৃত।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সাদা বক, মাছরাঙা, ভারই, ঘুঘু, বালি হাঁস, রাতচোঁরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দেখা মিলছে চলনবিলে। একশ্রেণির শিকারিরা রাতে এবং ভোরে এসব পাখি শিকার করছেন। শিকার করা পাখি হাট-বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে হরহামেশাই। আইনের তোয়াক্কা না করে এভাবে নির্বিচারে পাখি শিকার করে এক শ্রেণির অসাধু শিকারিরা স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রিও করছেন।
যেসব এলাকায় পাখি শিকার হচ্ছে, তাড়াশ উপজেলার ধাপতেতুলিয়া, চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা, সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দাসহ বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে পরিযায়ি এসব পাখি শিকার করা হচ্ছে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন পেশাদার পাখিশিকারি জানান, বাজারে পাখির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই কোনোমতে ধরতে পারলেই বিক্রি করতে সমস্যা হয় না। প্রতিজোড়া পাখি সাদা বক ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, চখাচখি ১০০ থেকে ১২০, কাইয়ুম পাখি ৩৫০ থেকে ৪০০ ও বালিহাঁস ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। ফলে বেশি লাভের আসায় অনেকেই মাছ ধরা বাদ দিয়ে পাখি শিকার করছেন। আর এসব দুর্গম এলাকাতে প্রশাসনের কোনো লোকজনও তেমন আসেন না।
তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিদ্যুৎ কুমার জানান,পাখি ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। পাখিরা শুধু প্রকৃতির শোভা বর্ধনের সঙ্গে ভারসাম্যও রক্ষা করে। পাখি শিকার বন্ধে আইন থাকলেও প্রয়োগ না থাকায় চলনবিল থেকে নানা প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত হচ্ছে। এভাবে পাখি ধরা বন্ধ করতে শাস্তির পাশাপাশি প্রয়োজন সচেতনতামূলক প্রচারণা।