আর মাত্র দুইদিন পর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজা আগামী বুধবার দেবীদূর্গার ৬ষ্টী বোধনের মাধ্যমে শুরু হতে যাচ্ছে। এ বছরে উল্লাপাড়ায় ৯৩ টি মন্দিরে দূর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজা উপলক্ষে সেচ্ছাসেবী টিম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য সহ সাদা পোশাকধারী বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুতি নিয়েছে। সর্বোচ্চ নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে উল্লাপাড়ার পুজা মণ্ডপগুলো। ইতিমধ্যেই পুজা মণ্ডপ গুলোতে আনসার বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
শেষ মূহুর্তে এসে প্রতিমা তৈরির কারিগররা ব্যস্ততম সময় পার করছেন। উল্লাপাড়া পৌর এলাকার ঝিকিড়া, ঘোষগাঁতী পাল পাড়ার প্রতিমা তৈরির কারিগর দিনরাত পরিশ্রম করে নিপুণ হাতে তৈরি করছেন প্রতিমা। তবে প্রতিমা তৈরির উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও কাঙ্ক্ষিত মূল্য পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন তারা।
উল্লাপাড়া উপজেলায় এবারে মোট ৯৩ টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন স্হানীয় পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দু। প্রতিমা তৈরির কারিগররা রাতদিন কাদামাটি দিয়ে একটু একটু করে নিপুণ হাতে দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করে। ধরণীর শক্ত মাটি নরম করে দেবী দুর্গার শরীরে গড়ে তুলছে কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী আর সরস্বতীর মূর্তি। কাজের চাপ বেশি থাকায় পুরুষদের পাশাপাশি কাজ করছে নারী সদস্যরাও। প্রতিমা তৈরি শেষে রং তুলির আঁচড় দেয়া শেষ পর্যায়ে। এখন শুধু মণ্ডপে উঠানোর অপেক্ষার গুণছে তারা।
পৌর এলাকার ঘোষগাঁতী পাল পাড়ার প্রতিমা তৈরির কারিগর রতন পাল জানান, প্রতিমা তৈরির বাঁশ, খড়, মাটিসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি প্রতিমার মূল্য। আর্থিকভাবে লাভবান না হলেও পৈত্রিক পেশা ধরে রাখতে এ কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
উল্লাপাড়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুজিত কুমার ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক রতন সরকার জানান, আমরা উল্লাপাড়াবাসি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। এবার সমগ্র উপজেলায় মোট ৯৩ টি মন্দিরে পূজা হবে। প্রত্যেক মন্দিরে প্রতিমা উঠানোর অপেক্ষায় রয়েছে। আইন শৃংখলা বাহিনী ও আমরা নিজেরাও প্রত্যেক মন্দিরের জন্য সেচ্ছাসেবক টিম গঠন করেছি। আইনশৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি আমাদের গঠনকৃত সেচ্ছাসেবক টিম দিনরাত নিরাপত্তায় কাজ করবে। সরকারীভাবে সব মন্দিরের জন্য অনুদান পেয়েছি। উল্লাপাড়া মডেল থানায় আইনশৃংখলা বাহিনীর সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে আশা করছি দুর্গাপুজা উৎসবমুখর হবে।
নিরাপত্তার বিষয়ে উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রাকিবুল হাসান জানান, শারদীয় দূর্গা পূজা যাতে সুন্দর ভাবে নিরাপত্তার সহিত অনুষ্ঠিত হয় তার জন্য আমরা উপজেলার ৯৩ টি মন্দিরে তথ্য সংগ্রহ করে সেখানে নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি টিভি স্থাপনসহ সেচ্ছাসেবী টিম ও পুলিশ মোতায়নের ব্যবস্হা করেছি। নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা থাকবে পুজা মণ্ডপগুলো। ইতিমধ্যেই আনসার বাহিনী মেতায়েন করা হয়েছে প্রতিটি মন্দিরে। আসন্ন দুর্গাপুজা উপলক্ষে উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশ নিরাপত্তার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।আমরা এখন থেকেই প্রত্যেকটি পূজা মন্ডবের কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে সবসময় যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। আমাদের পুলিশ প্রসাশনের পক্ষ থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাদা পোষাকেও আইন শৃংখলা বাহিনী রাখা হয়েছে।
উল্লাপাড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ আজাদ হোসেন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বলেছেন শান্তিপূর্ণভাবে দূর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হতে সার্বক্ষণিক পাশে থাকবে উল্লাপাড়া উপজেলা বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীগণ। ভয়ভীতির উর্ধ্বে থেকে সনাতনধর্মালম্বীরা তাদের প্রধান উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজা উদযাপন করবে। অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে এ বছর দুর্গাপুজা আরো আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশা করেন।